নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ গোয়েন্দাপ্রধানের

SHARE

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান, যাকে বরখাস্ত করার চেষ্টা করছে সরকার, তিনি সোমবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তার প্রতি ব্যক্তিগত আনুগত্য চাওয়ার এবং সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর নজরদারির নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

সর্বোচ্চ আদালতে দেওয়া এক শপথপত্রে এসব অভিযোগ তোলেন রোনেন বার, যাকে গত মাসে সরকার বরখাস্তের ঘোষণা দেওয়ার পর দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদের সূচনা হয়। এই আইনগত ও রাজনৈতিক সংঘাত নেতানিয়াহু বনাম রোনেন বারের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেটের প্রধানকে বরখাস্তের নজিরবিহীন এই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিরোধী দল, যারা এটিকে কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
৮ এপ্রিল দীর্ঘ শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট সরকার ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছতে বলেন এবং ইহুদি ধর্মীয় উৎসব পাসওভারের ছুটির পর পর্যন্ত সময় দেন। এই ছুটি সদ্য শেষ হয়েছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রোনেন বার শিগগিরই পদত্যাগ করতে পারেন। আদালতে সোমবার দাখিল করা শপথপত্রে তিনি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন, যার মধ্যে রয়েছে তার প্রতি ব্যক্তিগত আনুগত্য চাওয়া।

শপথপত্রে রোনেন বার লিখেছেন, ‘এটি স্পষ্ট ছিল, কোনো সাংবিধানিক সংকটের ক্ষেত্রে, আমাকে সুপ্রিম কোর্টের নয়, নেতানিয়াহুর আদেশ পালন করতে হবে।’

তিনি আরো জানান, নেতানিয়াহু তাকে ‘একাধিকবার’ বলেছেন, তিনি চান শিন বেট সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ইসরায়েলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক, ‘বিশেষ করে যারা এই বিক্ষোভের অর্থায়নে জড়িত, তাদের ওপর নজর দিতে’।

তিনি আরো নিশ্চিত করেন, সংবাদমাধ্যমে যেসব খবর এসেছে, তা সত্য—নেতানিয়াহু তার চলমান দুর্নীতির মামলায় সাক্ষ্যদান বিলম্বিত করার জন্য শিন বেটের প্রধানের সহায়তা চেয়েছিলেন।

এ ছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রী ও তার সহযোগীদের সেই অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেন, যেখানে বলা হয়েছিল, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার ব্যাপারে শিন বেট সময়মতো নেতানিয়াহু ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাকে সতর্ক করেনি।

৮ এপ্রিলের শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দেন, রোনেন বার ‘পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তার দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাবেন’। আদালত আরো উল্লেখ করেন, ‘পদের জন্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিতে কোনো বাধা নেই, তবে কোনো নিয়োগ ঘোষণা করা যাবে না।’

এদিকে নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক লাইনের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে রোনেন বারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রোনেন বার আজ সুপ্রিম কোর্টে একটি মিথ্যা হলফনামা জমা দিয়েছেন, যা ব্যাপকভাবে খণ্ডন করা হবে যথাসময়ে।’