দীর্ঘস্থায়ী ফাইনালের রেকর্ড, শিরোপা ধরে রাখলেন আলকারাজ

SHARE

কার্লোস আলকারাজের যেন আজ কৈ মাছের প্রাণ ছিল। ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে সহজেই হার মানবেন না। শেষে অবশ্য হারও মানেননি তিনি। ইয়ানিক সিনারের বিপক্ষে ৫ ঘণ্টা ২৯ মিনিটের দীর্ঘ এক ম্যারাথন লড়ে ইতিহাসই গড়েছেন তিনি।
ফ্রেঞ্চ ওপেনের ইতিহাসে দীর্ঘতম ফাইনাল। তাতে ফ্রেঞ্চ ওপেনের তো অবশ্যই, নিঃসন্দেহে গ্র্যান্ড স্লামেরও অন্যতম গ্রেটেস্ট ম্যাচ উপহার দিয়েছেন আলকারাজ ও সিনার।

পূর্বের রেকর্ড ছিল ৪ ঘণ্টা ৪২ মিনিটের। ১৯৮২ সালে দীর্ঘতম ফাইনালে আর্জেন্টিনার গুইলার্মো ভিলাসকে ১-৬, ৭-৬ (৬), ৬-০, ৬-৪ গেমে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন সুইজারল্যান্ডের ম্যাটস ইউল্যান্ডার।
৭ গ্র্যান্ড স্লামজয়ী ইউল্যান্ডের বয়স তখন ছিল মাত্র ১৭ বছর।

রোলাঁ গ্যারোর ফাইনালে আজ চতুর্থ সেটে তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টের সুযোগ পেয়েছিলেন সিনার। তবে ‘মৃত্যুর দুয়ারে’ দাঁড়িয়েও মনোবল হারাননি আলকারাজ।

নিজে স্প্যানিশ হওয়ায় কামব্যাক যেন তার রক্তেই মিশে ছিল।
প্রথম দুই সেট হেরে গিয়ে খাদের কিনারায় ছিলেন আলকারাজ। তৃতীয় সেটে আবার ফাইনাল হারার সেই শঙ্কা। সেই সেট জিতে প্রতিপক্ষকে চতুর্থ সেট খেলতে বাধ্য করলেন। কিন্তু চতুর্থ সেটে সিনারের সেই তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টের সুযোগ আলকারাজের জন্য বিভীষিকাময় হয়ে দাঁড়ায়।

তবে ‘মৃত্যুকে’ ঠিকই জয় করলেন।
পরে টাইব্রেকারে চতুর্থ সেটটিও জিতে নেন তিনি। এবং ম্যাচকে নিয়ে যান ফাইনাল সেটে।

শুরুতে ড্রপ শটে নিজে ধরা খেলেও শেষদিকে এই শটেই বাজিমাত করেছেন আলকারাজ। এর কারণ হতে পারে দুর্দান্ত স্ট্যামিনার অধিকারী সিনারের গতি শেষ দিকে কমে আসা। সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত কিছু ড্রপ শটে পয়েন্ট নেওয়ার সঙ্গে আত্মবিশ্বাসটাও খুঁজে পান আলকারাজ। আর সেই আত্মবিশ্বাসেই রোলা গ্যারোর শিরোপা নিজের কাছেই রেখে দেন স্প্যানিশ তারকা। গত বারের চ্যাম্পিয়নও ছিলেন ২২ বছর বয়সী তারকা। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের পঞ্চম গ্র্যান্ড স্লাম জিতলেন তিনি।

ক্লে কোর্টের ফাইনালে ৪-৬, ৬-৭, (৪-৭), ৬-৪, (৭-৪) ৭-৬ (১০-২) গেমে জেতাটা সহজ ছিল না আলকারাজের জন্য। স্কোরকার্ডই তার প্রমাণ। শেষ দুই সেট টাইব্রেকারে জেতা তো আর মুখের কথা নয়। সেটিও প্রথম দুই সেটে পিছিয়ে পড়ে। এটা শুধু সম্ভব হয়েছে আলকারাজের দৃঢ় মানসিকতার কারণে। তাই চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টটা নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দীর্ঘ সময়ে নিস্তেজ হওয়া শরীরটাকে মাটিতে ছেড়ে দিলেন।

অন্যদিকে সকল হতাশা গ্রাস যেন করেছে সিনারকে। এ নিয়ে টানা আটবার এটিপির ফাইনালে ওঠেছিলেন ইতালিয়ান তারকা। তার মধ্যে যে তিনবার হারলেন সবগুলোই আলকারাজের কাছেই।