হ্যান্স জিমার, সংগীত জগতের এক জীবন্ত কিংবদন্তি। ক্যারিয়ারে বহু ব্লকবাস্টার সিনেমায় তিনি সংগীত করেছেন। প্রতিটিই জনপ্রিয় হয়েছে। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন অনেক।
জিতেছেন অস্কারও। তার সংগীত সিনেমায় থাকুক, এটা বহু নির্মাতারই স্বপ্ন ও চাওয়া। তবে সেই চাওয়া পূরণ হয়নি সুপারহিরো সিনেমার আঁতুড়ঘর মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্স। জিন্স হ্যামারের সুর আজ পর্যন্ত কোনো মার্ভেলের কোনো সিনেমায় উঠেনি।
গত দেড় দশকের বেশি সময় হলিউড মাতিয়ে রেখেছে এমসিইউ (মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্স)। বহু জনপ্রিয়, ব্যবসাসফল ও বিগ বাজেটের সিনেমা নির্মাণ করলেও জিমারের সংগীত তারা পায়নি। কেননা জিমার সুপারহিরো সিনেমায় সংগীত করতে চান না। এটা জিমারের পুরনো সিদ্ধান্ত।
হ্যান্স জিমারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আরেক কিংবদন্তি নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলানের। তারা একসঙ্গে কাজ করেছেন ব্যাটম্যানে। এছাড়া তিনি যে সুপারহিরো সিনেমায় সংগীত করেননি এমন নয়। ১৯৮৪ সালে ‘এক্স-মেন: ডার্ক ফিনিক্স’ থেকে শুরু বলা যায়। ‘দ্য অ্যামেজিং স্পাইডার ম্যান টু’তেও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন।
২০১৬ সালে তিনি সংগীত করেছেন ‘ব্যাটম্যান’ ভার্সাস ‘সুপারম্যান: ডন অব জাস্টিস’ সিনেমায়। সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন জ্যাক স্নাইডার। এ সিনেমার সংগীত পরিচালনা জিমারের জন্য কঠিন ছিল বলেই তিনি প্রকাশ করেছেন। এরপর আর কোনো সুপারহিরো সিনেমায় সংগীত করেননি।
তবে এতকিছুর মধ্যেও কখনো তাকে এমসিইউতে কাজ করতে দেখা যায়নি। সম্প্রতি জশ হরোউইটজের পডকাস্টে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তিনি কি কখনো ডাক পাননি? উত্তরে জিমার বলেন, ‘তারা অনেকবারই ডেকেছে। কিন্তু ঘটনাটা হয়েছে এমন যে কখনো সময় অনুকূলে ছিল না। সত্যি বলতে এখন আমি অন্য ধরনের কাজ খুঁজছি। সুপারহিরো সিনেমার কথা আর ভাবছি না। ’সুপারম্যান’, ‘ব্যাটম্যান’, ‘স্পাইডার ম্যান’, ‘উয়ান্ডার ওইম্যান’ সব চরিত্রের সিনেমার জন্যই সংগীত করেছি। এখন আর নতুন কী করার আছে!’
এমসিইউতে কাজ করার প্রস্তাবের প্রসঙ্গে জিমার বলেন, ‘এ কথা শুনতে হয়তো খারাপ লাগবে, তবে কেভিন ফাইগি জানতে চেয়েছিলেন, আমার আপত্তিটা কোথায়। সত্যি বলতে তিনি বুঝতেই চাননি।’
হ্যান্স জিমারকে বর্তমানে বিশ্বসংগীতের সবচেয়ে প্রভাবশালী সুরকার হিসেবেই মানা হয়। ‘দ্য ডার্ক নাইট’, ‘দ্য লায়ন কিং’, ‘ম্যান অব স্টিল’, ‘ইনসেপশন’, ‘ইন্টারস্টেলার’, ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’-এর মতো সাড়াজাগানো একাধিক কালজয়ী সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করেছেন জার্মান এ সুরকার। সর্বশেষ ২০২২ সালে ‘ডুন’-এর জন্য তিনি সেরা মৌলিক আবহসংগীতের অস্কার জিতেছিলেন।