জেলেনস্কির রাজনৈতিক বিরোধীদের সঙ্গে ট্রাম্প মিত্রদের গোপন বৈঠক

SHARE

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কয়েকজনের সঙ্গে কিয়েভে গোপনে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চারজন শীর্ষ সহযোগী। ওই আলোচনার মূল বিষয় ছিল ইউক্রেন দ্রুত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে কি না।

পলিটিকোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের তিনজন আইন প্রণেতা এবং মার্কিন রিপাবলিকান পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ মিত্ররা ইউক্রেনের বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া তিমোশেঙ্কো এবং জেলেনস্কির পূর্বসূরি পেত্রো পোরোশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

খবরটি এমন সময় প্রকাশ্যে এলো যখন ওয়াশিংটন মস্কোর সঙ্গে মিলে জেলেনস্কিকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরানোর চেষ্টা করছে।
ইউক্রেন সামরিক আইনের অধীনে থাকায় সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে।

নির্বাচনবিরোধীরা বলছেন, নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা হতে পারে এবং রাশিয়া এতে কলকাঠি নাড়তে পারে। কারণ অনেক সম্ভাব্য ভোটার সম্মুখসারিতে লড়াই করছেন অথবা বিদেশে শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছেন।
ট্রাম্পের সহযোগীরা আত্মবিশ্বাসী যে, যুদ্ধের ক্লান্তি এবং ব্যাপক দুর্নীতির ফলে জনগণ হতাশ, তাই যেকোনো নির্বাচন হলে পরাজিত হবেন জেলেনস্কি।

জরিপে তার জনপ্রিয়তা বছরের পর বছর ধরে হ্রাস পাচ্ছে। যদিও সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট পদের লড়াইয়ে বেশ এগিয়ে আছেন জেলেনস্কি। এদিকে মার্কিন প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক অবস্থান হলো ট্রাম্প ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছেন না। ইউক্রেনের রাজনীতিতে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের অভিযোগ সম্প্রতি নাকচ করে দিয়েছেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক।
তিনি বলেছেন, ট্রাম্প শান্তির অংশীদার চান।

তবে ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আচরণ সম্পূর্ণ বিপরীত ইঙ্গিত দিচ্ছে। জেলেনস্কিকে নির্বাচন ছাড়া স্বৈরশাসক আখ্যা দিয়েছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড কিয়েভের বিরুদ্ধে নির্বাচন বাতিলের মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। ট্রাম্প শিবির আশা করছে, একটি নির্বাচন জেলেনস্কির ভরাডুবির জন্য যথেষ্ট।

তবে জেলেনস্কি এখনো তিমোশেঙ্কো ও পোরোশেঙ্কোর চেয়ে অনেক জনপ্রিয়। চলতি সপ্তাহে ব্রিটিশ জরিপ সংস্থা সারভেশনের জরিপে দেখা গেছে, ৪৪ শতাংশ মানুষ জেলেনস্কিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত ভালেরি জালুঝনি তার চেয়ে ২০ পয়েন্ট পেছনে আছেন। এ ছাড়া পোরোশেঙ্কোর প্রতি ১০ শতাংশ এবং তিমোশেঙ্কোর প্রতি মাত্র ৫.৭ শতাংশ মানুষের সমর্থন আছে।

ওই বৈঠকের মূল বিষয় হলো ইউক্রেন অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজন করা হবে। দ্রুত নির্বাচনের বিষয়টি চাপিয়ে দিতে চাইছে ক্রেমলিন। কারণ দীর্ঘ দিন ধরে তাকে সরাতে চাইছে রাশিয়া। যদিও যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে নির্বাচন আয়োজনের বিপক্ষে জনসমক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তিমোশেঙ্কো ও পোরোশেঙ্কো।