দলের সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর ডাকে সোমবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।
সোমবার সকাল থেকে রাজধানীতে যান চলাচল অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর কোথাও বড় ধরণের সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। তবে রোববার সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হামলা-ভাঙচুরের ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
গত রোববার কামারুজ্জামানের ‘শাহাদাত কবুলে’র জন্য দোয়া অনুষ্ঠানের কর্মসূচিও পালন করে জামায়াত। শনিবার রাত ১০টা ৫৭ মিনিটে পাঠানো দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে কামারুজ্জামানকে ‘বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, লেখক, ইসলামী চিন্তাবিদ, জনগণের প্রিয় নেতা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে মকবুল আহমাদ বলেন, “সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানকে ১১ এপ্রিল রাত ১০টার পরে হত্যা করেছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বায়বীয় ও কাল্পনিক অভিযোগে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে। এ মামলায় দলীয় লোকদের দ্বারা মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করে। সাক্ষীদের পরস্পরবিরোধী ও অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য থেকে তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের বিষয়টি বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচিত হয়। ”
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, “যে সোহাগপুরের কথিত ঘটনার অভিযোগে তাকে ফাঁসি কার্যকরের নামে হত্যা করা হলো তার সাথে মুহাম্মদ কামারুজামানের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বার বার বলেছেন, জীবনে কোনোদিনও তিনি সোহাগপুর যাননি। ওই এলাকায় কোনোদিন তাকে দেখেছে এ ধরনের কথা কেউ বলতে পারবে না। সরকার পরিকল্পিতভাবে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করে। জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান তার পরিবারের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে জানিয়েছেন তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার বিচার অবশ্যই আদালতে আখিরাতে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন নিজ হাতে করবেন। ”
তিনি বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর একজন ছাত্রকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার যে মহাষড়যন্ত্র ও তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার যে ব্যবস্থা আওয়ামী সরকার করেছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। আমরা সরকারের এই চক্রান্ত ও বিভৎস হত্যার নিন্দা, প্রতিবাদ এবং ধিক্কার জানাই।”
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, “মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রক্ত বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিকট অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। তার রক্ত বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে নিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্। যারা ষড়যন্ত্র করে তাকে হত্যা করেছে এবং ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে ইতিহাস কখনো তাদেরকে ক্ষমা করবে না। এই জালেম সরকারকে বিচারের নামে অবিচারের এবং পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডের জন্য জনতার আদালতে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।”