২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলের সাবেক এক অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘দেখবেন আমরা খুব ভালো কিছু করতে পারব না। বড় দৈর্ঘ্যর ফরম্যাটে (সেবার লিগ পর্বে ৯ ম্যাচ ছিল) আমাদের সুযোগ কম। যেসব টুর্নামেন্টে আমাদের ম্যাচ কম খেলতে হবে, সেসব জায়গায় ভালো করার সুযোগ বেশি।’ নিজের যুক্তির পক্ষে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদাহরণ টানেন তিনি।
টুর্নামেন্টের সেই আসরে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেই সেমিফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ, যা আইসিসির বড় কোনো ইভেন্টে এখনো মাহমুদ উল্লাহ-মুশফিকুর রহিমদের সর্বোচ্চ অর্জন হয়ে আছে।
আট বছর পর একই ফরম্যাটে আরেকটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল। আগামীকাল দুবাইয়ে নাজমুল হোসেনদের প্রতিপক্ষ ভারত। রোহিত শর্মাদের এবারের শিরোপার দাবিদার মনে করছেন বাংলাদেশের আরেক সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার।
কিন্তু বাংলাদেশের সম্ভাবনা কতটুকু? এমন প্রশ্নে মলিন হয়ে এলো তাঁর কণ্ঠস্বর। টুর্নামেন্ট ভালোভাবে শেষ করতে চাইলে উত্তরসূরিদের অবিশ্বাস্য কিছু করতে হবে বলে মন্তব্য করেন হাবিবুল।
এমন মন্তব্যের কারণ নিজেই খোলসা করলেন হাবিবুল, ‘এই টুর্নামেন্টটা বাংলাদেশের জন্য সহজ হবে না। প্রতিযোগী বাকি দলগুলোর দিকে তাকান, সব দল বেশি শক্তিশালী।
আর কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে এবার পার পাওয়া যাবে না। আমার মনে হয়, কন্ডিশন বলে আলাদা কিছু থাকছেই না। আট দলের মধ্যে চারটি দল কিন্তু এশিয়া অঞ্চলের। বাকিরাও এখন এমন কন্ডিশনে নিয়মিত খেলে অভ্যস্ত। সব মিলিয়ে যদি হিসাব করি, বাংলাদেশ দলকে ভালো করতে হলে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হবে।
’
নাজমুল-মাহমুদরা চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সর্বশেষ আসরের মতো এবারও ‘অবিশ্বাস্য’ কিছু করতে পারবেন কি না, সে জন্য অবশ্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কিন্তু সর্বশেষ ছয় মাসের ওয়ানডে পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে প্রবল আত্মবিশ্বাসেও হয়তো চিড় ধরে যাবে। এই সময়ে ছয় ওয়ানডে খেলা বাংলাদেশ দল একটি জয়ের বিপরীতে হেরেছে পাঁচটি। টুর্নামেন্টের অন্য সাত দল এই হিসাবে নাজমুলদের থেকে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। অন্যরা যেখানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে মাঠে নামার আগে অন্তত একটি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে, সেখানে বাংলাদেশ দল সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছে দুই মাসেরও বেশি সময় আগে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে। তাই দেশ ছাড়ার আগে কোনো রাখঢাক না রেখে প্রস্তুতি ঘাটতির কথা স্বীকার করে গেছেন প্রধান কোচ ফিল সিমন্স, ‘আমি আপনার কথার সঙ্গে একমত। এটা আমাদের সেরা প্রস্তুতি হচ্ছে না।’
যদিও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) অর্থাৎ টি-টোয়েন্টি খেলে ওয়ানডের গুরুত্বপূর্ণ একটি টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি সেরেছেন নাজমুলরা। তবে আধুনিক ক্রিকেটে এসবে খুব বেশি সমস্যা দেখছেন না হাবিবুল, ‘সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আধুনিক ক্রিকেটে খেলোয়াড়রা এসবের সঙ্গে অভ্যস্ত। এক সংস্করণ থেকে আরেক সংস্করণে খেলা এখন নিয়মিত ব্যাপার।’ তবু হাবিবুলের শেষ কথায়ও খানিক আক্ষেপ মিশে রইল, ‘এই টুর্নামেন্টের আগে এমন কিছু (ওয়ানডে খেলার) হলে ভালো হতো। ধরুন, এক-দুটো সিরিজ যদি খেলা যেত। তবু মন্দের ভালো যে যারা গেছে (চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে) তারা সবাই খেলার মধ্যে ছিল।’