প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাচ্ছে মেক্সিকো

SHARE

১৯২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করার পর মেক্সিকোতেও নারীরা ভোটদানের অধিকার লাভ করে। ১৮২১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে মেক্সিকো স্বাধীনতা লাভ করলেও নারীদের সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করার অধিকার ছিল না। সে জায়গায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ ছিল কুয়াশাচ্ছন্ন। প্রায় ৭০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর নতুন আশার আলো দেখা দিয়েছে মেক্সিকানদের মনে। দেশটির ইতিহাসের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন ক্লদিয়া শিনবাউম। খবর আলজাজিরার।

আশা করা হচ্ছে গতকাল রোববার (২ জুন) অনুষ্ঠিত হওয়া মেক্সিকোর জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে মরেনা পার্টির নেতৃত্বাধীন বামপন্থি জোট। দলটির হয়ে লড়ছেন ক্লদিয়া শিনবাউম, যিনি একজন মেক্সিকান রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানী এবং শিক্ষাবিদ। তিনি ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মেক্সিকো সিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। এ সময় তিনি অপরাধ দমন ও জমি সংক্রান্ত আইনের প্রচারণার জন্য জনগণের কাছে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন। ২০১৮ সালে বিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীদের তালিকায় জায়গা করে নেন। এছাড়া ২০০০ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন পরিবেশ সচিব। মেক্সিকো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ক্লদিয়া শিনবাউম হবেন দেশের প্রথম নারী ও ইহুদি প্রেসিডেন্ট।

২০২৪ সালের মেক্সিকো জাতীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে এগিয়ে থাকা দুইজনই নারী। এদের একজন ক্লদিয়া শিনবাউম ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী শোচিত গালভেজ সম্মিলিত বিরোধীদলীয় প্রার্থী। তারা দু’জনেই জনপ্রিয়তা জরিপে একমাত্র পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যপন্থি সিটিজেন মুভমেন্ট পার্টির মনোনীত প্রার্থী হোর্হে আলভারেজ মাইনেজের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছেন।

মেক্সিকো ১৮২১ সালে স্পেনে কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। মেক্সিকোর সরকারি নাম মেক্সিকান ইউনাইটেড স্টেট। দেশটি সরকারি ভাষা স্প্যানিশ। স্বাধীনতার প্রায় ৯৫ বছর পর ১৯১৭ সালে রচিত হয় মেক্সিকোর সংবিধান। মেক্সিকোতে একটি ফেডারেল বা যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। প্রেসিডেন্ট একাধারে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান। আইনসভা দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট। নিম্নকক্ষের নাম ফেডারেল চেম্বার অভ ডেপুটিজ, যার সদস্যসংখ্যা ৫০০। উচ্চকক্ষের নাম সেনেট, যার সদস্যসংখ্যা ১২৮। জনগণের ভোটাধিকারের বয়স ১৮। মেক্সিকোর সরকার ব্যবস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতোই তিনটি শাখায় বিভক্ত–নির্বাহী, আইন প্রণয়নকারী এবং বিচার বিভাগ। কিন্তু মেক্সিকোতে নির্বাহী শাখাটি অপর দুই শাখার উপর অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করে। ফলে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করেন।