ফিলিস্তিন অধিকৃত জেরুজালেম শহরের পবিত্র মসজিদুল আকসায় লাখো মুসল্লি তারাবির নামাজ পড়ছেন। গতকাল শনিবার (২৩ মার্চ) আল-আকসা চত্বরে অনুষ্ঠিত এশা ও তারাবির নামাজে অর্ধলক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ পড়েছেন। অবশ্য মসজিদে প্রবেশে আগের মতো ইসরায়েলি পুলিশের কঠোর বাধাবিপত্তি অব্যাহত রয়েছে।
এর আগের দিন শুক্রবার (২২ মার্চ) রাতে লক্ষাধিক মুসল্লি তারাবির নামাজে উপস্থিত ছিলেন।
একই দিন ইসরায়েলি বাধার মধ্যেও জুমার নামাজে অংশ নেন ১ লাখ ২০ হাজার মুসল্লি। রমজানের দ্বিতীয় জুমায় আগের চেয়ে মুসল্লির সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে।
গত সপ্তাহে রমজানের প্রথম জুমায় (১৫ মার্চ) অংশ নিয়েছিলেন মাত্র ৮০ হাজার মুসল্লি। গত অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর এ সপ্তাহে সর্বোচ্চসংখ্যক মুসল্লি অংশ নিলেও গত বছরের রমজানের তুলনায় তা নিতান্ত কম।
জেরুজালেমের ইসলামিক ওয়াকফ বিভাগের পরিচালক শায়খ আজ্জাম আল-খতিব জানান, মসজিদুল আকসায় এক লাখ ২০ হাজার মুসল্লি জুমার নামাজ পড়েছেন। তবে গত রমজানের মুসল্লির সংখ্যার তুলনায় এবারের অংশগ্রহণ খুবই কম। কারণ গত বছর একই সময়ে আড়াই লাখের বেশি মুসল্লি অংশ নিয়েছিলেন। তা ছাড়া এবারের রমজানে পশ্চিম তীরের বাসিন্দাদের মধ্যে শুধু ৫৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর কাছ থেকে পূর্ব অনুমতি সংগ্রহে না থাকলেও মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
জেরুজালেমের পুরনো শহর এবং আল-আকসা মসজিদের সব গেটে মুসল্লিদের বাধা দিতে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর উপস্থিতি আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। একইসঙ্গে মুসল্লিদের পরিষেবা দেওয়া স্বেচ্ছ্বাসেবীদেরও মসজিদে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।
প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, রমজানের দ্বিতীয় জুমার দিনেও ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী তাদের ক্রুদের আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করতে দেয়নি। তা ছাড়া মসজিদ প্রাঙ্গণে মুসল্লিদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা ও ফিল্ড ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় বাধা দেওয়া হয়। তা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন বিবেচনা করা হয়।
এদিকে পবিত্র রমজান মাসে সারা বিশ্বের মুসলিমদের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানানো হয়েছে। একাধিক ওমরাহ পালনের চেয়ে যুদ্ধাহত অসহায়দের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করছেন লিবিয়ার গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ সাদিক আল-গিরয়ানি। তিনি নফল আমলের অর্থ অসহায় বিপন্ন মুসলিমদের দান করার আহবান জানান।
তা ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সের চেয়ারম্যান শায়খ ড. আলী আল-কারাহ দাগি নফল ওমরাহ বা নফল হজের অর্থ গাজা, ইয়েমেন, সিরিয়ার মতো অসহায় দুঃখীদের পেছনের ব্যয় করার তাগিদ দেন।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরের ৪৩৩ জন নিহত হনে এবং সাড়ে চার হাজারের বেশি লোক আহত হন। এদিকে গাজায় এখন পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ৭২ হাজার ৫২৪ জন আহত হয়েছে।
খবর আনাদোলু এজেন্সি