হুথি বিদ্রোহী ও প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মনসুর হাদির অনুগত সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ইয়েমেনের এডেনে ১৪০ জন নিহত হয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (০৬ এপ্রিল) হাদির ঘাঁটি বলে পরিচিত বন্দরনগরী এডেনে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রেসিডেন্ট হাদি সেনাবাহিনীর তিন সর্বোচ্চ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার পরপরই এ সংঘর্ষ মারাত্মক আকার ধারণ করে। বরখাস্ত হওয়া তিন কর্মকর্তা হলেন- সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দুল্লাহ খায়রান, সেনা উপপ্রধান জেনারেল জাকারিয়া আল শামি ও স্পেশাল ফোর্স প্রধান জেনারেল আব্দুলা রাজ্জাক আলম্রৌনি।
নাম প্রকাশ না শর্তে ইয়েমেনী এক কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানান, নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বেসামরিক রয়েছেন।
এদিকে সৌদি নেতৃত্বে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর যৌথবাহিনী মানবিক সহায়তা দিতে রেডক্রসকে অনুমতি দিলেও, সহায়তা নিয়ে রাজধানী সানায় পৌঁছাতে বিলম্ব হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে সৌদি নেতৃত্বে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেনে মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার অনুমতি পাওয়া গেছে বলে জানায় আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাদানকারী সংস্থা রেডক্রস। সহায়তা নিয়ে সোমবার (০৬ এপ্রিল) সানায় রেডক্রসের দু’টি প্লেন পৌঁছানোর কথা থাকলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তা পৌঁছায়নি বলে জানা গেছে।
ইয়েমেনে মানবিক পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রসের (আইসিআরসি) মুখপাত্র সিতারা জাবিন।
তিনি বলেন, ইয়েমেনের পরিস্থিতি সত্যিই সংকটজনক। বিশেষ করে এডেনে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। আমরা এখনো একটি কার্গো প্লেনের সন্ধানে আছি, যা মানবিক সহায়তা নিয়ে সানায় অবতরণ করতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, গত রোববার (০৫ এপ্রিল) মানবিক সহায়তা দেওয়ার অনুমতি পেয়েছি। কিন্তু সানার রুটে বর্তমানে খুব কম প্লেনই উড়ছে। সে সঙ্গে ইয়েমেন নিজেই অনির্দিষ্টকালের জন্য তার উড়োজাহাজ চলাচল ব্যবস্থা স্থগিত করে দিয়েছে।
গত ২৬ মার্চ হুথি বিদ্রোহীদের দমনে ইয়েমেনে সৌদি আরবের নেতৃত্বে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো বিমান হামলা শুরু করে। এ হামলা শুরুর এগারোতম দিনে এসে তা বন্ধের শর্ত দিয়ে শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব করেছে হুথিরা।
এদিকে বিমান হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত মোট কত মানুষ নিহত হয়েছেন, তার হিসাব জানা না গেলেও, প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।