শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সার্ক গোষ্ঠীভুক্তদেশগুলিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বেনজির দৃষ্টান্ত গড়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার মারিশাস-সহ সাতটি সার্কভুক্ত দেশের সঙ্গে তার বৈঠকে রচিত হরো একটি বিরল দৃষ্টান্ত। মালদ্বীপ থেকে ভুটান, শ্রীলঙ্কা থেকে নেপাল প্রত্যেকটি রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন হিন্দিতে! সেই বক্তব্য অনুবাদ করে অপর পক্ষকে জানালেন সচিবেরা।
গত দশ বছরে এমন ঘটনার সাক্ষী থাকেনি হায়দরাবাদ হাউস। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, হিন্দি ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে তিনি গোটা অঞ্চলের রাজনীতিতে একটি স্বকীয় অবস্থান নিতে চেয়েছেন। গোটা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে রাজনৈতিক এবং বাণিজ্যিক ভাবে প্রধান চালকের আসনটিই লক্ষ্য মোদির। তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সবাইকে ডাকার মাধ্যমে তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিতও বটে।
নয়া দিল্লির এই পদক্ষেপের দিকে নজর রাখছে এই অঞ্চলে ভারতের প্রবলতম প্রতিপক্ষ চীন। ঠিক এই পরিস্থিতিতে আটটি দেশের নেতার সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলে জাতীয়তাবাদের তাসটিই খেললেন মোদি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে চীন, জাপানের মতো দেশগুলির নেতারাও কিন্তু দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যে যার নিজেদের দেশের ভাষাতেই কথা বলেন। অনুবাদের মাধ্যমে কথোপকথন চলে। হায়দরাবাদ হাউসে উপস্থিত আটটি দেশের ভাষা পৃথক। তাই সহজপন্থা হিসাবে ইংরেজিতেই কথাবার্তা চালানো যেত। কিন্তু সে পথে না হেঁটে গোটা অঞ্চলের সামনে জাত্যভিমানকে বিজ্ঞাপিত করলেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের নেতারা যখন যান তখন বক্তৃতায় অনেকেই মাতৃভাষায় কথা বলেন। মনমোহন অবশ্য বরাবরই বলতেন ইংরেজিতে। তার পরিবর্তে যখন প্রণব মুখোপাধ্যায় যেতেন, তিনিও ইংরেজিতেই বক্তৃতা দিতেন। বিভিন্ন দেশের ভাষা অনুবাদ করে নেয়ার জন্য কানে দেওয়ার যন্ত্রের ব্যবস্থা থাকে সেখানে। তা ছাড়া বক্তৃতার লিখিত রূপও পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন, কূটনৈতিক ক্ষেত্রে নিজের দেশের ভাষায় কথা বললে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা পাওয়া যায়।-সংবাদ সংস্থা