ধর্ষণের শিকারের পর অনেকেই লোক-লজ্জার ভয়ে মামলা করেন না। কেউ বা মামলা করলেও তা যতটা সম্ভব নিজে আড়াল করেই করে থাকেন। তবে এবার ধর্ষণের শিকার এক কিশোরী ঘটালেন অদ্ভুত কাণ্ড! ধর্ষণের শিকার হওয়ার দীর্ঘ দিন পরও ধর্ষক গ্রেফতার না হওয়ায় নিজের মাকে নিয়ে আসামের রাজ্য সচিবালয়ের সমানে ব্যানার টানিয়ে পালন করলেন অবস্থান কর্মসূচি। ব্যানারে লেখা, ‘আই ওয়াজ রেপ্ড, আই ওয়ান্ট জাস্টিস’। আর এ জন্য মা-মেয়ে দুজনকেই আটক করেছে পুলিশ। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
আসামের মরিগাঁওয়ের ভুরাগাঁও থেকে মাকে নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে আসা কিশোরীটি দশম শ্রেণিতে পড়ে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে স্থানীয় মাদ্রাসার এক শিক্ষক তাকে ঘর থেকে জোর করে নিয়ে যান। কিশোরীর কথায়, ‘রাতে আমার উপরে যৌন নির্যাতন চালায় ওই শিক্ষক। এর পর কাউকে কিছু না বলে চুপ করে থাকার হুমকি দিয়ে সকালে সে আমায় বাড়ি পৌঁছে দেয়।’
কিশোরীর মা জানান, ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। পরের দিন অভিযুক্তকে ধরে রাতে ভুরাগাঁও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার পরের দিনই থানা থেকে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। এসপি ও জেলা প্রশাসককে বারবার স্মারকলিপি দেওয়ার পরেও পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ তাদের।
মা-মেয়েকে আটকের ব্যাপারে পুলিশের যুক্তি, বিধানসভা চলাকালীন প্রতিবাদ জানাবার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এর জন্য আগে থেকে অনুমতি নিতে হয়। নিয়ম না মানাতেই তাদের আটক করা হয়। ন্যায়বিচার চাইতে এসে থানায় আটক হওয়া কিশোরী কান্নায় ভেঙে পড়ে।
কিশোরীর মা বলেন, ‘বার বার জেলা প্রশাসনকে বলেও লাভ না হওয়ায় আমরা রাজ্যের কর্তাদের কানে অভিযোগ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। আইন ভাঙার কোনও ইচ্ছেই আমাদের ছিল না। আমরা কোনও অশান্তিও করিনি।’ মায়ের প্রশ্ন’ একটি মেয়ে কতটা মরিয়া হলে নিজের লজ্জা তুচ্ছ করে ধর্ষণের মতো ঘটনার কথা পোস্টারে লিখে বিচার চাইতে পারে?’ পুলিশ পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেয়।