তিস্তার বদলা আত্রেয়ীর ওপর নিচ্ছে বাংলাদেশ

SHARE

atreeiআত্রেয়ী নদীতে বাঁধ দিয়ে তিস্তার বদলা নিচ্ছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ও বালুরঘাটের মধ্যে যাওয়া আত্রেয়ী নদীর জলস্রোত কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে এমনটাই মনে করছেন ভারতের পরিবেশবিদ ও নদী বিশেষজ্ঞরা।

ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই নদী দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাণ রেখা। নদীর দুই পাড়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কুমারগঞ্জ পতিরাম চকভৃগু ও বালুরঘাটের মত জনবসতি গড়ে উঠেছে। প্রতি বছর বিশেষ করে খরার মরসুমে জেলার অন্যান্য নদী গুলি শুকিয়ে গেলেও আত্রেয়ী কিন্তু পানি পূর্ণ থাকতো। সম্প্রতি এই নদীর জলস্রোত একেবারেই কমে গিয়েছে। পানিস্তর কমে যাওয়ার এই ব্যাপারটি সর্বপ্রথম নজরে এসেছে আত্রেয়ীর মৎসজীবী ও দুইপারের কৃষিজীবী মানুষদের। যারা জীবনযাত্রার সমস্ত কিছুই আত্রেয়ীর পানির ওপর নির্ভর করে।

জেলার পরিবেশ প্রেমীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন যে সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশের মোহনপুরা এলাকায় বড়সর বাঁধ তৈরি করে আত্রেয়ীর পানি আটকে দেওয়া হয়েছে। কংক্রিটের তৈরী ওই বাঁধ ইন্টারনেটে গুগল ও স্যাটেলাইট সার্চেও নজরে এসেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের সমজিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ১৪০০ মিটার দুরে দিনাজপুর-ফুলবাড়ি সড়কের উপর তৈরি মোহনপুর ব্রিজের ঠিক ওপাশে আত্রেয়ীর উৎস বরাবর বাঁধটি তৈরি করে জলস্রোত আটকে দেওয়া হয়েছে। যে কারণেই সীমান্তের এই দিকে নদীর জলস্রোত নেই বললেই চলে। মোহনপুরের বাঁধটি পরিবেশবিদদের রীতিমত চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।

বালুরঘাট মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপিকা বিউটি দাস জানিয়েছেন নদীর উৎস মুখে বাঁধ দেওয়ায় আত্রেয়ীর বিশেষ করে দক্ষিণ দিনাজপুরের অংশে পানিপ্রবাহ একেবারেই কমে গিয়েছে। যা ভৌগলিক ও পরিবেশগত দিকে দিয়ে খুবই চিন্তাজনক ব্যাপার। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে অবশ্যই আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

পরিবেশপ্রেমী তথা শিক্ষক তুহিনশুভ্র মন্ডল জানিয়েছেন আত্রেয়ীর পানিস্রোত কমে যাওয়ার কারণ স্যাটেলাইটের ক্যামেরার মাধ্যমে খুঁজতে গিয়ে তারা প্রথম মোহনপুরের ওই বাঁধটি লক্ষ করেছেন। এব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ওই ছবি সহ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশের পরিবেশমন্ত্রীকে মেইলের মাধ্যমে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। তিস্তার পাশাপাশি আত্রেয়ীর ব্যাপারেও দুই দেশের মধ্যে আলোচনার দরকার বলেও তিনি জানিয়েছেন।