‘শ্রীনিকে জনতার ধিক্কার’!

SHARE

srini lotasবিশ্বকাপ ফাইনালে আইসিসির সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও কাল তা দিয়েছেন তাঁর অধস্তন কর্মকর্তা আইসিসির চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসন! এ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এ ঘটনা নিয়ে কলকাতার পত্রিকাগুলো বেশ সরব।

গতকাল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের (এমসিজি) গ্যালারি থেকে নাকি শ্রীনিকে দেওয়া হয়েছে দুয়ো! এ প্রসঙ্গে ‘এবেলা’ লিখেছে, ‘ক্রিকেট প্রশাসক শ্রীনিকে জনতার ধিক্কার হজম করতে হলো। আইপিএল স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারির পর বারবার বিতর্কে জড়িয়েছে তাঁর নাম। রবিবার মেলবোর্নে তাঁকে দেখা মাত্রই গ্যালারি থেকে ভেসে এল তীব্র বিদ্রূপ।’

এ ঘটনাকে তুলনামূলক বেশি গুরুত্ব দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় পত্রিকা ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’। পত্রিকাটি ‘ট্রফি দিতে না পেরে উত্তেজিত আইসিসি প্রেসিডেন্ট ঢাকা ফিরে মামলা করতে পারেন’ শীর্ষক খবরে লিখেছে, ‘নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন বিশ্বজয়ী অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের হাতে ওয়ার্ল্ড কাপ তুলে দেওয়ার সময় পর্যন্ত তিনি (কামাল) অবশ্য আর অপেক্ষা করেননি। অপমানে আগেই বেরিয়ে যান। জানা হলো না গোটা এমসিজি যখন শ্রীনিবাসনের নাম ঘোষণা হতেই বিদ্রূপ ফেটে পড়ল, তখন তিনি আইসিসি প্রেসিডেন্ট কোথায় ছিলেন? বাংলাদেশ ক্রিকেটমহল তাদের দেশের আইসিসি প্রেসিডেন্টকে পুরস্কার বিতরণ থেকে কার্যত সাসপেন্ড করায় অত্যন্ত উত্তেজিত। কারণ আইসিসির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিশ্বকাপ তুলে দেওয়ার কথা কামালের। আইসিসি প্রেসিডেন্টের।’

‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ আরও লিখেছে, ‘শনিবার রাতে আইসিসির জনা কয়েক সদস্যকে নিয়ে বেসরকারি বৈঠক করেন শ্রীনিবাসন। সেখানেই কামালকে বলে দেন যে, আইসিসির কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙার অভিযোগে আপনাকে আমরা ট্রফিটা দিতে দেব না। কামাল অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, মিস্টার শ্রীনিবাসন, আজকের দিনে আইসিসি প্রেসিডেন্ট কে? শ্রীনি বলেন, আপনি। কালকে আইসিসি প্রেসিডেন্ট কে থাকবে? শ্রীনি বলেন আপনি। তাই যদি হয় তা হলে আমি বিশ্বকাপ তুলে দেব না কেন? শ্রীনি তখন বলেন, উত্তরটা আপনাকে আগেই দেওয়া আছে।’ পত্রিকাটি কামালের পূর্ণাঙ্গ বক্তব্যও প্রকাশ করেছে। সেখানে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, ‘ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করিনি, আইসিসির বিরুদ্ধে করেছিলাম’।

‘এই সময়’ পত্রিকা লিখেছে, ‘ভারতীয় বোর্ডে তাঁর একাধিপত্য ধাক্কা খেতে পারে, কিন্তু আইসিসিতে যে তিনিই সম্রাট, এমসিজিতে তা দেখিয়ে দিলেন আইসিসি চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসন।’ এবিপি নিউজ ব্যুরো লিখেছে, ‘তাঁর (কামালের) মন্তব্যের জেরেই প্রকাশ্যে আসে আইসিসির ভিতরে অন্তর্দ্বন্দ্ব ৷ নজিরবিহীন এই ঘটনার পর ফের প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা, ভারতীয় বোর্ডের পর সবার অলক্ষ্যে এবার কি আইসিসির রিমোট কন্ট্রোলও পকেটে পুরে ফেললেন নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন? ’

এদিকে ‘আনন্দবাজার পত্রিকার’ আশঙ্কা, ‘ভারতের বাংলাদেশ সফর করার কথা আগামী জুনে। কিন্তু দুই দেশের ক্রিকেট প্রশাসনিক সম্পর্ক যেমন তিক্ততায় পৌঁছেছে, এতে সফরটা হবে কি না, এই মুহূর্তে তা অনিশ্চিত।’