সালাহ উদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে গেছে: পেশাজীবী পরিষদ

SHARE

salahuddin8আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্তাই প্রমাণ করে তারা সালাহউদ্দিন আহমেদকে তুলে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

সোমবার বেলা ১২টার দিকে পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ‘নিখোঁজ’ সালাহউদ্দিন আহমেদের গুলশানের বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদকে সাক্ষাৎ করার পর তারা সাংবাদিকদের কাছে এই দাবি জানান।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের নেতা ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, ‘‘সালা্উদ্দিন আহমেদ বিএনপির পক্ষে বিবৃতি দিয়ে কথা বলতেন- এটাই হচ্ছে তার অপরাধ। তার নিখোঁজের বিষয়ে আদালতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে প্রতিবেদন জমা দিয়ে্ছিল তা সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল সালাহউদ্দিনের স্ত্রীর আইনজীবীকে না দেখানো এবং সরকারের নিশ্চুপ থাকাই প্রমাণ করে এ্রর সঙ্গে তারা জড়িত।’’

‘‘আমরা পেশাজীবী পরিষদ অবিলম্বে সালাহউদ্দিন আহমেদকে অক্ষত অবস্থা ফেরত চাই। এই গুম-অপহরণের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।’’

প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রুহুল আমিন গাজী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনহ আখতার হোসেন, সহসভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি রফিকুল ইসলাম।

সালাহউদ্দিনের স্ত্রী সাবেক সাংসদ হাসিনা আহমেদ  আবারো দাবি করে বলেয়েন, ‘‘আমি শতভাগ নিশ্চিত আমার স্বামীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে। তাকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত পেতে আমি সর্বমহলের সহযোগিতা চাই।’’

২০ যাবত খোঁজ না পেয়ে একরকম মানসিকভাবে বিপর্যন্ত সালাহউদ্দিনের স্ত্রী কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমি আমার স্বামীর আজো খোঁজ পাচ্ছি না। আমার বাচ্চাদের কাছে আমি কী জবাব দেবো।”

১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ। সালাহ উদ্দিনের খোঁজ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন তার স্ত্রী হাসিনা। এ বিষয়ে আগামী ৮ এপ্রিল হাই কোর্টে আবার শুনানির তারিখ রাখা হয়েছে।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেনি। তার কোনো খোঁজও পাওয়া যায়নি।

অজ্ঞাত স্থানে থেকে এক মাস ধরে বিবৃতি পাঠিয়ে আসা বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবকে খোঁজা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পেলে তাকে গ্রেপ্তার করবে পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই সালাহ উদ্দিনকে নিয়ে গেছে দাবি করে তাকে ফেরত দেওয়া না হলে সরকারের ‘কঠিন পরিণতি’ হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

সালাহ উদ্দিনের সন্ধান পেতে সরকার প্রধানের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ইতোমধ্যে স্মারকলিপি দিয়েছেন তার স্ত্রী হাসিনা।

সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহ উদ্দিন। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য হন এবং প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তার স্ত্রী হাসিনাও সংসদ সদস্য ছিলেন। তাদের দুই ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে সৈয়দ ইব্রাহিম আহমেদ কানাডায় ও বড় মেয়ে পারমিজ আহমেদ ইকরা মালয়েশিয়ায়, ছোট ছেলে সৈয়দ ইউসুফ আহমেদ ও ছোট মেয়ে ফারিবা আহমেদ রাইসা ঢাকায় স্কলাস্টিকায় পড়ালেখা করে।