বিক্ষোভের নামে ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে ডেনমার্ক

SHARE

নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক উদ্বেগের কারণে প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ নিয়ে নতুন করে ভাবছে ডেনমার্ক। নাগরিকদের প্রতিবাদ বা বিক্ষোভের নামে পবিত্র কোরআন বা অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানোর মত কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার কথা বিবেচনা করছে দেশটি।
আজ সোমবার বিবিসির প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। কোপেনহেগেন দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভসহ কিছু পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে হস্তক্ষেপ করার আইনি উপায় খতিয়ে দেখছে প্রশাসন।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই ধরনের বিক্ষোভ চরমপন্থিদের উপকার করে এবং নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি করে।
এদিকে একই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে সুইডেন প্রধানমন্ত্রীও। তিনি বলেন, ‘সুইডেনও একই ধরনের প্রক্রিয়ায় কাজ শুরু করেছে।’
বিক্ষোভের নামে একাধিক বিতর্কিত প্রতিবাদ কর্মসূচির অনুমতি দেওয়ার পর স্ক্যান্ডিনেভিয়ান উভয় দেশই সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন পোড়ানোর মত ঘটনাও রয়েছে। এসব ঘটনার জেরে বেশ কয়েকটি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সাথে ডেনমার্ক ও সুইডেনের কূটনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এক বিবৃতিতে ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা এমন কিছু বিক্ষোভে হস্তক্ষেপ করতে চায় যেখানে ‘অন্যান্য দেশ, সংস্কৃতি ও ধর্মের অবমাননা করা হচ্ছে এবং যেখানে নিরাপত্তা উদ্বেগসহ ডেনমার্কের জন্য উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।’
ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বিশেষভাবে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে, এই ধরনের বিতর্কিত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ডেনমার্কের আন্তর্জাতিক খ্যাতির ওপর প্রভাব ফেলেছে। এসময় বিক্ষোভের নামে ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানোর ঘটনায় ইতোপূর্বে সরকারের নিন্দা জানানোর ঘটনাও এখানে পুনরাবৃত্তি করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই ধরনের বিক্ষোভগুলো এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে বিশ্বের বহু দেশ বা অংশ ডেনমার্ককে এমন ‘একটি দেশ হিসেবে দেখা হচ্ছে যা অন্যান্য দেশের সংস্কৃতি, ধর্ম ও ঐতিহ্যের অবমাননা করে। এছাড়া অবমাননার কাজেও সহায়তা করে’ বলেও মনে করা হচ্ছে।
এ ছাড়া বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনও একই পথে হাঁটছেন। এক বিৃবতি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনও। তিনি বলেন, ডেনমার্কের মত সুইডেনেও ইতোমধ্যেই একই প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই বিষয়ে তিনি ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন ক্রিস্টারসন।
প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টারসন ইনস্টাগ্রামে লিখেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই (পবিত্র কোরআন বা অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো বন্ধ করতে) আইনি পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে শুরু করেছি। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা এবং সুইডেন ও বিশ্বজুড়ে সুইডিশদের নিরাপত্তা জোরদার করার ব্যবস্থা বিবেচনা করার জন্য এটি করা হচ্ছে।’