হয়তো আনুশকার বিরাট শো

SHARE

birat anuskaসিডনি তাদের কাছে সুখের হয়নি। এসসিজি গ্যালারিতে ক্যামেরা ‘জুম’ করেছিল যে মুখ, বিশ্বকাপ থেকে ভারত-বিদায়ের সেটা মূর্ত অভিব্যক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট খুললে চোখে পড়া উচিত। ঘাড় ঘুরিয়ে মাঠের দিকটা একবার দেখে এসসিজি ড্রেসিংরুমের দিকে এগোচ্ছেন পরাজিত এক যোদ্ধা। আর তা দেখে গ্যালারিতে প্রায় রক্তশূন্য, বিবর্ণ মুখ নিয়ে বসে তারই প্রিয় বান্ধবী।

বিরাট কোহলি এবং আনুশকা শর্মা নিঃসন্দেহে বৃহস্পতিবারের সিডনি রাত ভুলে যেতে চাইবেন। ভুলে যেতে চাইবেন সমর্থকদের একাংশের তাদের ঘিরে কদর্য মন্তব্য। স্টিভ ওয়ার শহর বর্তমান ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচ্য ‘কাপল’কে যন্ত্রণা ছাড়া কিছু দেয়নি। কিন্তু আর এক শহর দিতে পারে। দিতে পারে কিছু সুখকর স্মৃতি। সংগঠকদের কথা সত্যি হলে যেখানে আর দশ দিনের মধ্যে তাদের ঢোকা উচিত। যেখানে অপেক্ষায় থাকবে এসসিজির চেয়েও বিশালায়তন এক গ্যালারি। অপেক্ষা করবে ও রকমই ক্রিকেটপাগল দর্শক। যন্ত্রণার নয়, অপেক্ষায় থাকবে মেহফিলের রাত।

কলকাতার কথা হচ্ছে। আইপিএল উদ্বোধনের কথা। ৭ এপ্রিল অনুষ্ঠান মানে তো আর দশ দিন বাকি।

এবং আবার বিরাট-আনুশকা!

বোর্ড এবং আইপিএল সংগঠকদের বিবরণ অনুযায়ী,  যে অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে যুবভারতী স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকছেন আনুশকা শর্মা। বলা হচ্ছে সম্মতি পাওয়া শেষ। আনুশকা চূড়ান্ত। সেটা হলে বোর্ড আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই প্রথম পারফর্ম করতে চলেছেন আনুশকা। যা বসে দেখবেন বিরাট! আইপিএলের উদ্বোধনের নিয়ম অনুযায়ী সেখানে সব টিমের অধিনায়ককে থাকতে হয়। বিরাট অবশ্য একা নন, পুরো টিম নিয়েই সে দিন থাকবেন। তিনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক। উদ্বোধনের দিন তিনেকের মধ্যে ইডেনে কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচ। পুরো টিম নিয়েই তাই ক্যাপ্টেন কোহলি থাকবেন। সংগঠকদের পক্ষ থেকে আবার চেষ্টা হচ্ছে বাড়তি কিছুর। যদি কোনও ভাবে বিরাটকে তখন মঞ্চে তোলা যায়! অনুষ্ঠান তো ওখানেই মেগা হিট হয়ে যাবে!

কাপ-ক্ষতেও বড় প্রলেপ সঙ্গে পড়বে বোধহয়। সেমিফাইনাল থেকে ভারতের বিদায়ের পর অবিশ্বাস্য ভাবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আক্রমণ করা হয়েছে আনুশকাকে! যার এক দফা প্রতিবাদ শুক্রবার হল। যেখানে একযোগে ঘটনার তীব্র নিন্দা করল দেশের খেলাধুলো থেকে অভিনয় জগত। সানিয়া মির্জা থেকে সুস্মিতা সেন কেউ বাদ যাননি। সানিয়া টুইট করলেন, ‘আনুশকাকে দোষ দেওয়া আর ঠাট্টা করা হচ্ছে কেন? একজন মেয়ে কি শুধু মনোযোগ নষ্টই করে, শক্তি জোগায় না? বিরাট যখন সেঞ্চুরি করে বা আমরা যখন জিতি, তখন কী হয়?’ প্রিয়ঙ্কা চোপড়া লিখলেন, ‘মাত্র একটা ম্যাচ দেখার জন্য একজন মেয়েকে অপমান করা হলো, যে কি না সাপোর্টিভ বান্ধবী। জঘন্য!’ ঋষি কপূর বলে দিলেন, আনুশকাকে যারা এ ভাবে অপমান করছে তারা অশিক্ষিত নির্বোধ ছাড়া কিছু নয়। টুইটে লিখেওছেন সেটা। সুস্মিতা সেনও চরম আক্রমণাত্মক- ‘আনুশকাকে নিয়ে যারা ঠাট্টা করছে তাদের বলি, অন্য কোনও খেলা দেখে নাও। এ দেশের স্পিরিট আর ক্রিকেট, কোনোটাই তোমাদের জন্য নয়।’ ভারতজোড়া এমন প্রতিবাদের সরব বিস্ফোরণ দেখার পর সংগঠকদের কারও কারও মনে হচ্ছে, নীরবটা দেওয়া যাবে ক্রিকেটেরই অনুষ্ঠানে এনে। কলকাতায়। প্রকাশ্যে!

তবে শুধু আনুশকা শর্মা শো-এ উদ্বোধনের গ্ল্যামার আটকে থাকবে ভাবলে ভুল হবে। আরও এক জনের আসার কথা হচ্ছে, যাকেও আইপিএল উদ্বোধনে দেখা যায়নি কখনও। তিনি হৃতিক রোশন! যার শো-ও নাকি চূড়ান্ত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবার আইপিএল সিইও সুন্দর রামনের সঙ্গে সিএবির দুই কর্তা। যুগ্ম সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় এবং কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে। বিশ্বরূপ বললেন, “এই নামগুলোই মোটামুটি ফাইনাল। দুর্ধর্ষ উদ্বোধন হবে।”

সব সত্যি হলে, দুর্ধর্ষই হবে। হৃতিককে শোনা গেল যেকোনো এক ভাবে আনা হতে পারে। প্যারাশু্যটে করে তাকে আকাশ থেকে এলইডি মঞ্চে নামানো হতে পারে। অথবা, বাইক জাম্পে আবির্ভাব! বলা হচ্ছে, ইকো পার্কে যখন শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানের অনুমতি পাওয়া গেল না, তখন যুবভারতীতেও যাতে আগের বারের চেয়ে বেশি জাঁকজমকপূর্ণ হয় সেটা দেখা হচ্ছে। সুরকার প্রীতম, উঠতি নায়ক বরুণ ধবনরা আসছেন। রাতের আকাশে লেজার শো-র কথা চলছে। যেখানে মাঠে ঢোকার সময় এক এক জন ক্যাপ্টেনের মুখ ফুটে উঠবে! একটু পরে ফুটে উঠবে তাদের সইও। সঙ্গে আতসবাজির রোশনাই। তবে আতসবাজির খুব দরকার পড়বে কি? প্রথমটা ঠিক হলে, শেষেরটা  অনায়াসে বাদ রাখা যায়।

বিরাট-আনুশকা একসঙ্গে- আর কিছু লাগে নাকি!