খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, মঙ্গা কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর হলেও আমরা পেট ভরে ভাত খেতে পারি। কিন্তু আমাদের এখন প্রয়োজন পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্যের।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) কার্নিভাল ও হারমোনি হলে বাংলাদেশে প্রথম ফুড অ্যান্ড কেমিক্যাল ল্যাব এক্সপো ২০২২ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিটিএফ (বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন) প্রকল্পের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বিএফএসএ-এর (বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটি) সার্বিক সহায়তায় এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। তিনি বলেন, যা খেলে রোগ বৃদ্ধি পায় এবং বিরল রোগে আক্রান্ত হয় সেটাকে আমরা খাদ্য বলতে রাজি নই। সে কারণে খাদ্য ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে। ঠিক মতো খাদ্য পরীক্ষা করতে পারলে বিদেশের বাজারেও আমরা প্রসার লাভ করবো।
খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে সচেতনতা ও নীতি-নৈতিকতা মানার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খাদ্যে আমরা অনেক সময় রং মেশাই। সেটা খাদ্যের রং কি না তা দেখতে হবে। কেন না খাদ্যের রং অনেক মূল্যবান। যদি খাদ্যের রং ব্যবহার না করে সাধারণ রং ব্যবহার করা হয় তখন সেটা অনিরাপদ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, খাবার ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার আগে মনের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করতে হবে। কী করছি, মানুষের মুখে যাওয়ার মতো খাবার প্রস্তুত করছি কি না তা দেখতে হবে। আমাদের সঠিক পথে, সঠিক মন নিয়ে এগোতে হবে।
মঙ্গা কাটিয়ে আমরা সবাই পেট ভরে ভাত খেতে পারি: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্য পরীক্ষায় দেশে ভালো ল্যাবরেটরির প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, খাবার নিরাপদ করতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। কিন্তু শুধু জরিমানা বা আইন প্রয়োগ করে খাদ্য নিরাপদ করা সম্ভব নয়।
উদ্বোধনী অধিবেশনের পর ল্যাবরেটরির প্রদর্শনী এবং আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে খাদ্য নিরাপত্তা ও পরীক্ষা নিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ফুড অ্যান্ড কেমিক্যাল ল্যাব এক্সপোর মাধ্যমে সরকারি ও বাণিজ্যিক ল্যাব বা পরীক্ষাগারের সেবাসমূহ প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে জনসচেতনতা গড়ে তোলা হবে।
পাশাপাশি এ এক্সপোর মাধ্যমে সব খাদ্য ও কৃষিপণ্যের পরীক্ষাগারগুলো একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসাসহ আলোচনা এবং পরীক্ষণ সুবিধা সহজলভ্য হবে। ভোক্তা ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা এর মাধ্যমে ল্যাবের সার্বিক সেবা সম্পর্কে জানতে সক্ষম হবে।
সরকারি, অ্যাকাডেমিক, গবেষণাভিত্তিক ও বেসরকারি পর্যায়ের ৪৪টি ল্যাব এ এক্সপোতে অংশ নেয়। প্রতিটি ল্যাবের সেবাসমূহ উপস্থাপন করার জন্য প্রত্যেকের আলাদাভাবে প্রদর্শনী স্টলের ব্যবস্থা করা হয়। দিনব্যাপী এ এক্সপো তিনটি ভিন্ন অংশে অনুষ্ঠিত হয়।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম সরকারের সভাপতিত্ব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি চিফ অব মিশন হেলেন লাফেইভ।
এক্সপোর প্রাণ কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবে প্রতিষ্ঠানটির হেড অব কোয়ালিটি কন্ট্রোল ড. এ এম মারুফ কবির বলেন, আমরা আমাদের সক্ষমতা প্রদর্শনের সু্যোগ পেয়েছি। আমাদের ২০টির বেশি ল্যাব রয়েছে। আমরা বাংলাদেশে অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড দ্বারা অ্যাক্রিডিটেড। প্রত্যেক খাদ্যদ্রব্যই ল্যাবে চেক করে গেটের বাইরে বের করা হয়।