বসছে পার্লামেন্ট, সুতায় ঝুলছে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্ব

SHARE

ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্ব যে টিকছে না, সেটা আগেই অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। শেষ হয়েছিল আনুষ্ঠানিকতাও। তবে আদালতের রায়ে সমীকরণ বদলে পাকিস্তানের রাজনীতির মোড় ঘুরেছে অন্যদিকে।

সার্বিক পরিস্থিতিতে অবস্থা এখন এমন, যেন সুতায় ঝুলছে ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া এই প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্য। তিনি থাকছেন নাকি বিদায় নিচ্ছেন, সে ফলের জন্য পার্লামেন্টের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে আগ্রহীদের।

দ্য ডন বলছে, সম্মান বাঁচানোর চেষ্টায় অবশ্য এই পার্লামেন্টই ভেঙে দিয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, যা রায় হবার তা হবে পার্লামেন্টেই। অসাংবিধানিক কিছু করা যাবে না।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসাতে হবে। আস্থা ভোটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মুলতবি করা যাবে না অধিবেশন। ৩ এপ্রিলের আলোচ্যসূচির সঙ্গে মিল রেখে সকালে এ অধিবেশন শুরু করতে হবে।

৩৪২ আসনের পার্লামেন্টের মধ্যে ১৭২ জনের সমর্থনের প্রয়োজন ইমরান খানের বিরোধীদের।

গত রোববার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী জোটের তরফে পেশ হওয়া অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ভোটাভুটির কথা থাকলেও ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি তা খারিজ করে দেন।

তিনি জানান, বিদেশি শক্তির প্ররোচনায় আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী এবং তা দেশের কল্যাণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই পাকিস্তানের সংবিধানের ৫ নম্বর ধারা মেনে এ নিয়ে কোনো ভোট করাতে পারবেন না তিনি।

এর পরেই ইমরান খানের সুপারিশে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সেদিন রাতেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেন বিরোধীরা। সোমবার থেকে শুনানি শুরু হয়।

পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে এতে অংশ নেন বিচারপতি মুনীব আখতার, বিচারপতি আইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম ও বিচারপতি জামাল খান মন্দোখেল।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের এ রায় নিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘আমি সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। কিন্তু বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়টি তাদের দেখা উচিত ছিল। রায় দেওয়ার আগে বিষয়টি একবার হলেও দেখা উচিত ছিল।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি। এই অনাস্থা প্রস্তাবে বিদেশি হস্তক্ষেপ ছিল। আমি চেয়েছিলাম সুপ্রিম কোর্ট অন্তত এ বিষয়টিতে নজর দেবে। অন্য একটি দেশ চক্রান্ত করে পাকিস্তান সরকারের পতন ঘটাতে চায়- এটি একটি গুরুতর অভিযোগ।’

ইমরান খান আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের তরুণদের সামনে আমরা কি উদাহরণ দিয়ে যাচ্ছি। তারা যদি দেখে রাজনীতিবীদরা তাদের বিবেককে বিক্রি করে দিচ্ছে কি শিখবে?’