সাঙ্গাকারাকে ফেরালেন ফকনার

SHARE

sangakara8কুমার সাঙ্গাকারার সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে ভালোই জবাব দিচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপে টানা তিন সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া সাঙ্গাকারাকে থামিয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। দলীয় ২১৪ রানে ফকনারের বলে ফিঞ্চের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তিনি ১০৭ বলে ১১টি চারে ১০৪ রান করেন।

সাঙ্গাকারা ফিরলেও অধিনায়ক ম্যাথুস ও চান্দিমাল রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করছেন। ব্যাট হাতে অগ্নিশর্মা হতে চেষ্টা করছেন তারা দুজন। ৩৬ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২২৪ রান।

বিশাল টার্গেট পাড়ি দিতে গিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই লাহিরু থিরিমান্নে (১) জনসনের শিকার হন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দিলশান ও সাঙ্গাকারার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কা। তারা ১৩০ রানের জুটি গড়েন। দিলশানকে এলবির ফাঁদে ফেলে এই জুটি ভাঙেন ফকনার। দিলশান ৬০ বলে ৮টি চারে ৬২ রান করেন।

এদিন ওয়ানডে ক্রিকেটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের সংগ্রাহকও হয়ে যান সাঙ্গাকারা ১৪ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করে। শচিন টেন্ডুলকারের পর এখন সাঙ্গাকারার অবস্থান। ১৮ হাজার ৪২৬ রান নিয়ে শচিন শীর্ষে। তারপরই ১৪ হাজারি সাঙ্গাকারা। তৃতীয় স্থানে থাকা রিকি পন্টিংয়ের ঝুলিতে আছে ১৩ হাজার ৭০৪ রান।

দিলশান ফিরলেও এক প্রান্তে সাঙ্গাকারার ব্যাট পোড়াতে থাকে অস্ট্রেলিয়ানদের। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৪তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পর ইংল্যান্ডের সঙ্গেও সেঞ্চুরি করেন সাঙ্গাকারা। তৃতীয় উইকেটে জয়াবর্ধনের সঙ্গেও ৫৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। জয়াবর্ধনে ১৯ রান করে রানআউট হন।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে আসা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা খুব ভালো ছিল না। ৪১ রানেই দুই ওপেনার ওয়ার্নার (৯), ফিঞ্চকে (২৪) ফিরিয়ে দিয়ে স্বাগতিকদের চেপে ধরেছিল শ্রীলঙ্কা। স্পিনের সামনে অস্ট্রেলিয়ার দুই সেরা ব্যাটসম্যান মাইকেল ক্লার্ক ও স্টিভেন স্মিথ দলের হাল ধরেন। তাদের ১৩৪ রানের সময় উপযোগী জুটি স্বাগতিকদের পাইয়ে দেয় বড় রানের ভিত। তাদের সাবলীল ব্যাটিং দৃশ্যপট পাল্টে দেয়।

ইনিংসের ৩২তম ওভারে দলীয় ১৭৫ রানে ক্লার্ককে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন মালিঙ্গা। ক্লার্ক ৬৮ রান করেন। ২ রান পরই স্মিথ দিলশানের শিকার হন। ৭২ রানের ইনিংস খেলেন স্মিথ। এরপরই শুরু হয় ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটিং তান্ডব। সঙ্গে যোগ দেন ফর্ম হারিয়ে খুঁজতে থাকা ওয়াটসন। দুজন মিলে ম্যাচ অনেকটা একপেশে করে ফেলেন। শুরু করেন ধুন্ধুমার ব্যাটিং। বিশেষ করে ম্যাক্সওয়েলের মারকুটে ব্যাটিং অস্ট্রেলিয়ার রানটা প্রায় শ্রীলঙ্কার ধরা ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যায়। তারা ১৩.৪ ওভারে ১৬০ রানের জুটি গড়েন।

২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ম্যাক্সওয়েল। উইকেটের চারপাশে তার ঝড়ো ব্যাটিং দিশেহারা করে তোলে শ্রীলঙ্কাকে। ম্যাক্সওয়েলকে থামানোর অনেক চেষ্টা করেও সফল হয়নি লঙ্কানরা। সিডনিতে চারÑছক্কার বৃষ্টিতে মেতে উঠেন ম্যাক্সওয়েল। ৫১ বলে তিন অংকের ঘর স্পর্শ করেন ম্যাক্সওয়েল। এটি তার প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে এটি দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ানদের পক্ষেও অবশ্য দ্রুততম।

কয়েকবার জীবন পেয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল সেঞ্চুরির আগে। তবে বেশিরভাগ সময়ই ফিল্ডাররা তার ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি অনেক চেষ্টার পরও। সাঙ্গাকারা, থিসেরা পেরেরা লম্বা দূরত্ব দৌড় চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু বলের নাগাল ঠিকমত পাননি। সেঞ্চুরির পর থিসেরা পেরেরার ফুল টস বলে মিড অনে যে ক্যাচ তুলেন ম্যাক্সওয়েল সেটি সহজেই ধরেছেন মালিঙ্গা। ৫৩ বলে ১০টি চার ও ৪টি ছয়ে ১০২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন ম্যাক্সওয়েল।

রান খরায় থাকা ওয়াটসনও ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। ফকনার রানের খাতা খোলার আগে রান আউট হন। ইনিংস শেষের এক ওভার আগে ওয়াটসন চান্দিমালের হাতে ধরা পড়েন। তিনি ৪১ বলে ৬৭ রান (৭ চার, ২ ছয়) করেন।  হ্যাডিন ৯ বলে ২৫ বলের ক্যামিও খেলেন। শ্রীলঙ্কার মালিঙ্গা ও থিসেরা পেরেরা ২টি করে উইকেট পান।