ব্রাজিলে প্রবল বৃষ্টির জেরে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৯৪ জনে। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির রিও ডি জেনেরিও প্রদেশের পার্বত্য শহর পেট্রোপলিসে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মুষলধারে বর্ষণের কারণে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দেয়। এতে বহু বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।
এদিকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পেট্রোপলিস শহরে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন শহরের মেয়র।
বিবিসি বলছে, রিও ডি জেনেরিও থেকে ৬৮ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত পেট্রোপলিস শহরে প্রবল বৃষ্টি আঘাত হানার ফলে রাস্তাগুলো যেন নদীতে পরিণত হয়েছে। পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার বাড়িগুলো ধ্বংস হয়েছে এবং বহু গাড়ি পানিতে ভেসে গেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যা ও ভূমিধসে প্রায় ৮০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
স্থানীয় আবহাওয়া সংস্থা মেটসুলের তথ্য অনুযায়ী, পেট্রোপলিসের কিছু অংশে ছয় ঘণ্টারও কম সময়ে প্রায় ২৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা পুরো মাসের প্রত্যাশিত বৃষ্টির চেয়েও বেশি। বিবিসি বলছে, বন্যা ও ভূমিধসের পর এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে। মূলত জীবিতদের খোঁজে জোর তল্লাশি করছেন দেশটির সেনাসদস্য ও উদ্ধারকর্মীরা।
ব্রাজিলের ন্যাশনাল সিভিল ডিফেন্স দফতর টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টির জেরে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়া আরও ২৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
রিও ডি জেনেরিওর অগ্নি নির্বাপক দফতর জানিয়েছে, ১৮০ জনেরও বেশি দমকলকর্মী, সেনাসদস্য এবং অন্যান্য উদ্ধারকর্মী জীবিতদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে কাদায় চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া ভিডিওতে শহরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং রাস্তায় গাড়ি ভাসতে দেখা যাচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ফুটেজে দেখা গেছে, পেট্রোপলিস ও তার আশপাশের শহরের সড়গুলোতে ব্যাপক স্রোতে বয়ে যাচ্ছে বন্যার পানি। আর সেই স্রোতে ভেসে চলেছে গাড়ি ও ভূমিধসের ফলে ভেঙে পড়া বাড়িঘরের ধ্বংসাবশেষ।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো এক টুইটবার্তায় পেট্রোপলিসের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাথমিক সহায়তা দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।