বঙ্গবন্ধু আজীবন বাঙালীর অর্থনৈতিক মুক্তি ও অসম্প্রদায়িক রাজনীতি করেছেন : শিল্পমন্ত্রী

SHARE

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, বিশ্বের কোথাও এমন কোন রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ঘটেনি, যেখানে একজন নেতাকে তাঁর স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের হত্যাকান্ডের বিচার প্রচলিত আইনে হয়েছে। তবে অনেক প্রশ্নের সমাধান এখনও পায়নি, এ হত্যাকান্ডের নেপথ্যে কি হয়েছিল? এখন সময় এসেছে সমন্বিত ফ্যাক্ট এন্ড ফাইন্ডিং কমিটি করে এ হত্যাকান্ডের নেপথ্যে যারা ছিল তাদেরকে খোঁজে বের করে বিচার করা। জাতির পিতা শেখ মুজিব সারাজীবন বাঙালীর অর্থনৈতিক মুক্তি ও অসম্প্রদায়িক রাজনীতি করেছেন। একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশ ও জাতি গঠনে বাঙালী জাতিকে প্রস্তুত করেছিলেন। শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। তাই এসএমই খাতের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশন, বিসিকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও প্রণোদনা দেয়া প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে রূপকল্প নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথে এগুচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ও ১৫ আগস্টের সকল শহিদের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে শিল্পমন্ত্রী আজ ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং মুখ্য আলোচক ছিলেন জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো: মফিজুর রহমান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ থেকে অনেককেই সুবিধা নিতে দেখা গেলেও ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ জানাতে কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী বা পেশাজীবীদের কাউকে পাওয়া যায়নি। বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করা যাদের দায়িত্ব ছিল তারা তখন কি করেছিল, কমিশন গঠন করে তা বের করতে হবে। ১৫ আগস্টের পর যারা জীবনবাজি রেখে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল তাদেরকে বাধা দেয়া হয়েছিল এবং তাদের প্রতিশোধ নিতে দেয়া হয়নি। অন্যদিকে, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে যারা জীবন বাজি রেখে চেষ্টা করেছেন, তাদের খোঁজ কেউ রাখেনি। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো দেশকে ছাড়িয়ে যেতে পারতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দেশের উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কতোটা প্রয়োজন, ২০২১ সালে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। ১৯৫৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য ‘এই দেশের অর্থনীতির জন্য আমাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে দেশের পল্লী অর্থনীতির ওপর, কারণ পল্লী অর্থনীতির ওপর দেশের অর্থনীতির ৮০ ভাগ নির্ভরশীল’ প্রমাণ করে তিনি কতোটা দূরদর্শী ছিলেন। তিনি আরো বলেন, মূলতঃ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহেই বঙ্গবন্ধু তার তিনটি গ্রন্থ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘আমার দেখা নয়া চীন’ লিখেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে তিনি একটি কমিশন গঠনেরও দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন বলেন, সভাপতির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, ৫৬ বছরের জীবনের ৮৮ ভাগই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ব্যয় করেছেন দেশের মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। মাত্র ১২ ভাগ সময় তিনি দিতে পেরেছেন নিজের পরিবারের জন্য। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে ৪৩তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ২৩তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় দেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে এসএমই ফাউন্ডেশন।