দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে সিরিজ জিতল পাকিস্তান

SHARE

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি জেতে পাকিস্তান আর দ্বিতীয়টিতে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে তৃতীয়টি হয়ে যায় সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ। এ ম্যাচে ফখর জামানের সেঞ্চুরি ও বাবর আজমের দৃঢ় ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। যদিও নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনেককে ছাড়া খেলতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই করলেও শেষরক্ষা করতে পারেনি। পাকিস্তান ম্যাচটি জিতে নেয় ২৮ রানে।

সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২০ রান করে অতিথিরা। ফখর জামানের সেঞ্চুরি এবং বাবর আজম ও ইমাম উল হকের ফিফটি চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায়, যা তাড়া করতে গিয়ে ২৯২ রানে অলআউট স্বাগতিকরা।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ধীরগতিতে শুরু করে ইমাম ও ফখর। প্রথম পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৫৩ রান তোলেন তারা। একই গতিতে দুজন ছুটেছেন আরও ১১ ওভার। ১৯তম ওভারে দলীয় স্কোর একশ’ ছাড়ানোর আগে নবম ওয়ানডে ফিফটি করেন ইমাম, সিরিজে নিজের দ্বিতীয় পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৫৯ বল খেলে। ২২তম ওভারে দলীয় ১১২ রানের মাথায় ভাঙে এই জুটি। ইমাম ৭৩ বলে ৫৭ রান করে কেশব মহারাজের বলে কাইল ভেরিয়েন্নেকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।

অধিনায়ক বাবরের সঙ্গে ফখরের জুটি পাকিস্তানকে আরও দৃঢ় ভিত গড়ে দেয়। ৯০ বলে ৯৪ রানের এই জুটির শুরুতে ৬২ বলে ফিফটি করেন ফখর। আগের ম্যাচে রেকর্ড ১৯৩ রান করা এই বাঁহাতি ওপেনার ইনিংসের শেষ দিকে ঝড় তোলেন। ৩১তম ওভারে লুথো সিম্পালাকে টানা তিনটি চার মারেন। ৩৫তম ওভারে বেউরান হেনড্রিক্সের বলে একটি রান নিয়ে ৯৯ বলে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন ফখর। এটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শতক। পরের ওভারে মহারাজের বলে উইকেটকিপার হেনরিখ ক্লাসেনের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি, ১০৪ বলে ৯ চার ও ৩ ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংস সেরা ১০১ রান।

ফখরের বিদায়ের পর বাবরের সঙ্গে বড় ধরনের জুটি গড়তে পারেননি অন্য ব্যাটসম্যানরা। মিডল অর্ডারে ফাটল ধরলেও বাবর এগিয়ে নেন দলকে। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা মারলেই সেঞ্চুরি হয়ে যেতো। কিন্তু বাউন্ডারির একেবারে কাছে ভেরিয়েন্নের ক্যাচ হন বাবর। আক্ষেপে পোড়েন ৬ রানের। ৮২ বলে ৭ চার ও ৩ ছয়ে ৯৪ রান করেন বাবর।

৪৯তম ওভারে চারটি ছক্কা মেরে দলকে তিনশর ঘরে নিয়ে যান হাসান আলী, যার তিনটি এসেছে শেষ ৩ বলে। ১১ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থেকে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর ছুড়ে দেওয়ায় তার অবদানও কম নয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন মহারাজ। দুটি পান এইডেন মার্করাম।

লক্ষ্য তাড়া করতে মালানকে নিয়ে নামেন মার্করাম। তিনি ১৮ রানে ফিরে যান ৫৪ রানের জুটি গড়ে। উইকেটটি নেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। জেজে স্মাটসকে (১৭) বোল্ড করেন উসমান কাদির।

মালানকে নিয়ে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা প্রতিরোধ গড়েছিলেন। কিন্তু মোহাম্মদ নওয়াজ তাদের ৫০ রানের জুটি ভেঙে দেন। মালানকে ৭০ রানে এলবিডাব্লিউ করেন। বাঁহাতি স্পিনারের বলে বাভুমা বোল্ড হন ২০ রান করে। ১৪ বলের ব্যবধানে নওয়াজ তৃতীয় উইকেট নেন ক্লাসেনকে (২) ব্যাট-প্যাডের ফাঁদে ফেলে।

১৪০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর অ্যান্ডিল ফেলুকোয়ায়ো ও ভেরিয়েন্নে ১০৮ রানের জুটি গড়েন। ৪০ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে প্রথম ওয়ানডে ফিফটি করেন ভেরিয়েন্নে। তিনটি করে চার ও ছয়ে ৫৩ বলে ৬২ রান করে হারিস রউফের বলে উসমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ভেরিয়েন্নে। আর হাসানের শিকার হয়ে ফেরেন ফেলুকোয়ায়ো। তার আগে ৬১ বলে ৫৪ রান করে যান এই ব্যাটসম্যান।

এই দুজনকে ফিরিয়ে ম্যাচ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয় পাকিস্তান। হেনড্রিক্সকে (১) ফেরান হারিস। শাহীন তার শেষ দুই ওভারে মহারাজ (১৯) ও ডারিন ডুপাভিলিয়নকে (১৭) বোল্ড করে প্রোটিয়াদের গুটিয়ে দেন। ৪৯.৩ ওভারে সব উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

৩টি করে উইকেট নেন নওয়াজ ও শাহীন আফ্রিদি। হারিস পান দুটি উইকেট।

ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন বাবর আজম। আর সিরিজসেরা হন ফখর জামান।