সামরিক সরকারের নির্দেশ পালন করা থেকে বিরত থাকতে ভারতে আশ্রয় চাওয়া মিয়ানমারের পুলিশ সদস্যদের ফেরত চেয়েছে দেশটি। জান্তাবিরোধী চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই সম্প্রতি প্রায় ৩০ জন পুলিশ সদস্য সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় চেয়েছেন। খবর বিবিসির।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা কর্তৃপক্ষ এক চিঠিতে ভারতকে ‘বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখতে’ আটজন পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করে তাদের কাছে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে।
মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ভারতের মিজোরাম রাজ্যের কর্মকর্তারা গতকাল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মিয়ানমার পুলিশের নিম্ন পদের কিছু কর্মকর্তা দেশ ছেড়ে ভারতে ঢুকেছেন। ভারতীয় কর্মকর্তাদের দাবি, আগতরা বলেছেন তাঁরা সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানো এবং বিক্ষোভকারীদের দমন-নির্যাতনে সামরিক জান্তার আদেশ মানতে চান বলেই এমনটি করেছেন।
ভারতের মিজোরাম রাজ্যের চাম্ফাই জেলার কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মারিয়া জুয়ালি টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, ‘বর্তমানে, আমরা আর কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। শুক্রবার থেকে ভারতের সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে পুলিশও টহলে অংশ নিয়েছে।’
মিয়ানমারে সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভে দমন-পীড়নের আদেশ মানতে নারাজ এমন অন্তত ৩০ জন নিম্ন পদের পুলিশ কর্মকর্তা অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ভারতে ঢুকেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য রয়টার্সকে জানান মিজোরাম রাজ্যের জ্যেষ্ঠ একজন পুলিশ কর্মকর্তা।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে চলছে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। রক্তক্ষয়ী এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক এবং আহত হয়েছেন অনেকে। সেনা অভ্যুত্থানের অবসান এবং দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ সামরিক বাহিনীর হাতে আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। গতকাল শনিবারও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন সামরিক শাসন বিরোধীরা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারে বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৪ জনের বেশি। তবে, অন্যান্য প্রতিবেদনে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল গত বুধবার। মিয়ানমারের বিভিন্ন নগর ও শহরে সেদিন ৩৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন।