কানাডায় আস্থা ভোটে জয় পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ২১ অক্টোবর দেশটির সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনে কেন্দ্রে লিবারেল পার্টির সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির অনাস্থা প্রস্তাব নিম্ন পরিষদ হাউস অব কমন্সে ভোটাভুটিতে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় ক্ষমতায় টিকে গেলেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো এবং তার দল।
স্থানীয় গণমাধ্যম সিটিভি নিউজ জানায়, সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ১৪৬টি, বিপক্ষে ১৮০টি। অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি ও সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম দল ব্লক ক্যুইবেকয়ার সংসদ সদস্যরা। অন্যদিকে প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টি, এনডিপি, গ্রীন পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা।
কোভিড-১৯ মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় সরকারের নেওয়া বহু পদক্ষেপের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিক, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, বেসরকারী সংস্থার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য নানাবিধ আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি রয়েছে।
কানাডার শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় পর্যায়ের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার ৯১ কোটি ২০ লাখ ডলার বিতরণের জন্য একটি দাতব্য সংস্থা ‘উই’ (ডঊ)-কে মনোনীত করেছিল।
সেই সংস্থার সাথে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো, তার স্ত্রী, মা ও ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতার কারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ও একমাত্র সুযোগ হিসেবে মনোনয়নের মধ্য দিয়ে ‘স্বার্থের সংঘাত’ ঘটেছে বলে বিরোধী দলগুলো প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল।
চাপের মুখে লিবারেল সরকার শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা বিতরণের দায়িত্ব থেকে ‘উই’-কে অব্যাহতি দেয়।হাউস অব কমন্সের নৈতিকতা বিষয়ক কমিশনার এবং সংসদের একাধিক কমিটির অনুসন্ধানে এই অভিযোগ প্রমাণ হলে অর্থমন্ত্রী বিল মরনো পদত্যাগে বাধ্য হন।
কনজারভেটিভ পার্টি ও ব্লক ক্যুইবেকয়া প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগ দাবি করে।
পরে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারের অর্থ ব্যয়, ‘উই’ বিতর্ক ও স্বার্থের সংঘাত সবকিছু নিয়ে লিবারেল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তা’ তদন্তের লক্ষ্যে একটি নতুন কমিটি গঠনের জন্য প্রস্তাব করে এবং উই সংক্রান্ত নথি প্রকাশের দাবি জানায় কনজারভেটিভ পার্টি।
সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে তারা সংসদে লিবারেল সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করে। ফরাসীভাষী ক্যুইবেক প্রদেশ ভিত্তিক দল ব্লক ক্যুইবেকয়া এই প্রস্তাব সমর্থন করে এবং তার পক্ষে ভোট দেয়।
উল্লেখ্য কানাডার হাউস অব কমন্সের মোট ৩৩৮ আসনের মধ্যে রয়েছে লিবারেল পার্টি ১৫৪টি, কনজারভেটিভ পার্টি ১২১টি, ব্লক ক্যুইবেকয়া ৩২টি, নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) ২৪টি, গ্রিণ পার্টি তিনটি ও স্বতন্ত্র দুইটি। এ ছাড়া শূন্য রয়েছে দুটি আসন।