বঙ্গবন্ধু কর্নারের বই কেনায় অনিয়ম, তদন্তে সংসদীয় উপ-কমিটি

SHARE

মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ তৈরির জন্য বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই কেনায় বড় ধরণের অনিয়ম হয়েছে। এক্ষেত্রে বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব ও মেধাস্বত্ব চুরির মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এই অভিযোগ তদন্তে সংসদীয় উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৮ম বৈঠকে এই উপ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সভাপতি সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে কমিটির সদস্যরা ছাড়াও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থতি ছিলেন।

কমিটি সূত্র জানায়, সংসদ-সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বাবুকে আহ্বায়ক করে গঠিত ৪ সদস্যের উপ-কমিটির সদস্যরা হলেন- আলী আজম, বেগম শিরীন আখতার ও মো. মোশারফ হোসেন। উপ-কমিটিকে যথাসম্ভব দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ তৈরির জন্য বই কেনায় অনিয়মের ঘটনা কমিটি জানতে পেরেছে। বিষয়টি নিয়ে কমিটির বৈঠকে আলোচনা শেষে একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপ-কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর কমিটি প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে।

কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ তৈরির জন্য বই কেনায় অনিয়মের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বক্তব্য সন্তোষজনক না হওয়ায় সংসদীয় উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এরআগে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং বঙ্গবন্ধুর জেলজীবন নিয়ে বই ‘৩০৫৩ দিন’ কেনার ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ নামে দুটি প্রকাশনা সংস্থা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে বই দু’টির গ্রন্থস্বত্ব ও মেধাস্বত্ব চুরি করে নাজমুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি প্রকল্পের মোট ২৮ কোটি ৭৮ লাখ ১২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ২০ কোটি ৭০ লাখ ৮৬ হাজার ৪০০ টাকাই পাচ্ছেন। যিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে কর্মরত রয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এদিকে বৈঠকে করোনা মহামারীকালীন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে যে সেবা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শেষে করোনাকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পড়াশুনার খোঁজখবর নেওয়ার এবং পড়াশোনা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়ে আরো সচেষ্ট থাকার জন্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।