‘যারা এতিম, তারা একা নও, তোমাদের পাশে আছি’

SHARE

‘তোমরা যারা এতিম, তারা একা নও। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন তোমাদের পাশে আমি আছি। তোমাদের ব্যথা আমরা বুঝি। আমিও একদিন ঘুম থেকে উঠে শুনি আমার বাবা-মা-ভাইসহ কেউ নেই।’

আজ শুক্রবার (১৪ আগস্ট) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট শহীদদের স্মরণে ৫০ হাজারবার কোরআন খতম উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিভিন্ন এতিম খানা ও সরকারি শিশু পল্লী থেকে শিশুরা মোনাজাতে অংশ নেয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দোয়া মাহফিলে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এতিমদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তোমাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে । তোমরা প্রতিটি শিশু যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারো এজন্য তোমাদের ভোকেশনাল ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে। বাবা-মা কারো চিরকাল থাকে না। তোমরা মানুষের মতো মানুষ হলে বাবা-মা যেখানেই থাকুক, তারা তোমাদের জন্য দোয়া করবেন। তোমরা মানুষ হতে পারলে তোমরাও একদিন এতিমদের পাশে দাঁড়াতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এবং আমার ছোট বোন শেখ রেহানা সব সময় তোমাদের মতো এতিম এবং অসহায়দের কথা ভাবি। এজন্য তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কিভাবে দেয়া যায় আমরা সে চিন্তা করি। তাদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের জীবনে তোমরাই সবচেয়ে আপনজন। এজন্য আমাদের পরিবারে যে কারো জন্মদিনে আমরা বাইরে বড় করে কোনো অনুষ্ঠান না করে তোমাদের মত এতিমদের কাছে আমরা মিষ্টি ও খাবার পাঠাই।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বড়লোকেরা তো সব সময় ভালো ভালো খাবার খায়। যে কারণে জন্মদিনে অন্য কাউকে দাওয়াত না করে আমরা তোমাদের মতো শিশুদের দাওয়াত করি। তোমাদের জীবন সুন্দর হোক, সফল হোক। মন দিয়ে পড়াশোনা করবে। সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতা নিয়ে তোমরা কাজ করবে। নিজেরা বড় হতে পারলে তোমরা একদিন এই রাষ্ট্রের উপকার করতে পারবে।

হিজড়া ও বিভিন্ন অনগ্রসর জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হিজড়া এবং বিভিন্ন অনগ্রসর জাতিকেও আমরা সহযোগিতা করছি। যারা হিজড়া তারাও তো কোনো না কোনো মায়ের সন্তান। কেন তাদের দূরে ঠেলে দেওয়া হয়, কেন তাদের রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়। তারাও পরিবারের সন্তান, তারাও পরিবারেই বড় হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিচার পাওয়ার সুযোগ ছিল না। আজকে একটা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সবাই মামলা করতে পারেন। বিচার চাইতে পারেন। আমরা বিচারটা চাইতে পর্যন্ত পারিনি। আইন করে একটা হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করা হলো। প্রতিটি হত্যায় জড়িত খুনিরা যেন পার না পায় আমি সেই পরিবর্তন আনতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সব শোক ভুলে আছি। মানুষের জন্য কিছু করে যেতে চাই যেন বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পায়।