মুজিববর্ষে উপজেলা পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার তৈরির আহবান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর

SHARE

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিতে চলতি মুজিববর্ষে দেশের উপজেলা অফিসগুলোতে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপনের আহবান জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

আজ বুধবার কালের কণ্ঠকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ আহবান জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, মুজিববর্ষের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের জনপ্রশাসন এবং মাঠ প্রশাসন কাজ করে আসছে। নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরা, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় সমৃদ্ধ করা এবং বঙ্গন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশকে যেন সোনার বাংলায় রূপান্তর করতে ব্যাপক কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে জনপ্রশাসন তার অবদান রেখে চলেছে।

সেক্ষেত্রে আমি বলবো, আমাদের উপজেলা অফিসগুলোতে বঙ্গবন্ধু কর্নার তৈরি করতে হবে। যেখান থেকে প্রতিনিয়ত জাতির জনক সম্পর্কে জানবে সবাই। জাতির জনকের আদর্শগুলোকে হৃদয়ে ধারণ করতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সেখানে বিভিন্ন ঘটনাকে নিয়ে বই, ইতিহাস নিয়ে লেখা বই, বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য-ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর যে দর্শন ছিল এবং বঙ্গবন্ধুর যেসব ঘটনাবলী ছিল সেগুলোকে তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধু কর্নার দরকার।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন যে ২০২০ সালকে আমরা মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করি এবং সেই অনুযায়ী আমাদের ব্যাপক পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু কভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে আমাদের যেভাবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে এই মুজিববর্ষ উদযাপন করার কথা ছিল, সেইভাবে আমরা করতে পারিনি। কারণ এ পরিস্থিতিতে সারা পৃথিবীতেই সরকারগুলোকে ভিন্নভাবে কাজ করতে হয়েছে এবং মানুষের জীবনযাত্রার ধরনেও অনেক পরিবর্তন এসেছে।

তারপরও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মুজিববর্ষকে ঘিরে নানা ধরনের পরিকল্পনা ছিল, যে বিষয়টি ছিল ‘জনমুখী জনপ্রশাসন’। আমাদের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে রূপকল্প ছিল সেটিই এখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের রূপকল্পে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে জনমুখী জনপ্রশাসন অর্থাৎ জনপ্রশাসনের সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় যাতে আমরা পৌঁছে দিতে পারি তাই আমাদের অঙ্গীকার। মুজিববর্ষে আমাদের জনপ্রশাসনের যে অঙ্গীকার আছে, সরকারের যে রূপকল্পটি আছে সে অনুযায়ী আমরা সমস্ত কর্মগুলো বাস্তবায়নের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে যাতে তার প্রত্যাশিত সেবাটি দিতে পারি সেই কাজ করে যাচ্ছি।

প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, যখন করোনা হানা দিল তখন আমাদের মাঠ প্রশাসন ব্যাপক আন্তরিকতার সঙ্গে ও ঝুঁকি নিয়ে কাজের নেতৃত্ব দিয়েছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মানুষকে সচেতন করেছেন, সাধারণ ছুটির সময় মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য পৌঁছে দিয়েছেন, জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি সমন্বিতভাবে এই কাজগুলো করে গেছেন। এর মধ্যে আমরা দুটি ঈদ উদযাপন করেছি। এই ঈদে আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কীভাবে মানুষকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় না যেতে উৎসাহিত করা যায় এবং কীভাবে জনসমাগম এড়িয়ে মানুষকে করোনা থেকে মুক্ত রাখা যায়। ডিজিটাল হাট স্থাপনসহ বিভিন্নভাবে জনপ্রশাসনের অধীনস্থ সংস্থাগুলোর মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা সফলভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা শেখ হাসিনা সরকারের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরেই এগোচ্ছি। আজকে আমাদের যে জীবনমান, আজকে বাংলাদেশ যে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হয়েছে। এ সরকারের সব সেবাগুলো, সুফলগুলো জনগণ ভোগ করছে। বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ, বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি বাংলাদেশ, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি বাংলাদেশ, কৃষিতে সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশ, অবকাঠামোয় উন্নয়ন, নদী খনন, গ্রামীণ রাস্তা অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক যে কার্যক্রম চলছে তারই মধ্য দিয়ে এই দেশটি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত হতে চলেছে।