বিনা খরচে অক্সিজেন সেবা

SHARE

করোনায় সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে মানুষ। কেউ খাবার নিয়ে আবার কেউ অর্থ সহায়তা দিয়ে মানুষকে সহযোগিতা করছে। তবে করোনার আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সুবিধার্তে ব্যতিক্রমী এক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে ছাত্রলীগের তিনজন নেতা। সংকটাপন্ন বা মুমূর্ষ রোগীর জন্য চালু করেছে ‘জয় বাংলা অক্সিজেন সেবা’। ফোন করলে অক্সিজেনের সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। এই সুবিধা নিতে রোগীর কোনো খরচ নেই। কেবল ফোন করে জানালে অল্প সময়ে রোগী বাসায় অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছে।

উদ্যোক্তারা জানান, অক্সিজেনের চাহিদার বেশির ভাগ দরিদ্র মানুষ। অনেকের অক্সিজেন কিংবা অক্সিজেন সিলিন্ডার কেনার সামর্থ্য নেই। ফোন পেলেও বাসায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

এই উদ্যোক্তা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সদ্য সাবেক স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ।

তাঁরা জানান, করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি। মুমূর্ষ রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজন হলেও পাচ্ছে না আবার অনেকের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় অক্সিজেন সুবিধা নিতে পারছে না। হাসপাতালে সুবিধা না পেয়ে বাড়তি দামের কারণে অনেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে পারছে না। এতে অনাকাঙ্খিতভাবে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটছে। অসহায় ও সংকটে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে এই উদ্যোগ। রাজধানীর যেকোনো এলাকা থেকে ০১৬২৩০০০১০০, ০১৬৭৭১২৫৭৫৮, ০১৭২৫৩৪৩০৩৮ নম্বরে ফোন করলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর বাসায় অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

তাঁরা জানান, ব্যক্তিগত উদ্যোগ, বন্ধু-বান্ধব ও ও শুভাকাঙ্খীদের আর্থিক সহায়তায় প্রাথমিকভাবে ১২টি অক্সিজেন সিলিণ্ডার দিয়ে যাত্রা হয়। নতুন করে এক ব্যবসায়ী আরও ১০ সিলিন্ডার উপহার দিয়েছে। এখন সবমিলিয়ে ২২টি অক্সিজেন সিলিণ্ডারের মাধ্যম্যে সেবা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৬টি সিলিন্ডার রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা রোগীদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সেবামূলক এই কাজে কোনো ফি কিংবা জামানত নেই। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। পাশাপাশি সেবা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিলিন্ডার ফেরত দিতে হবে।

প্রথমবার অক্সিজেন সেবায় সিলিন্ডার ও অক্সিজেন বিনামূল্যেই দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়বার কোনো রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হলে নিজেদেরকে অক্সিজেন রিফিল করতে হবে। অক্সিজেনের প্রয়োজন শেষ হলে সিলিন্ডার ফেরত দিতে হবে।

সাদ বিন কাদের চৌধুরী জানান, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। শুধু করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীই নন, অন্যান্য রোগীর জন্যও অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে বিনামূল্যে জয় বাংলা অক্সিজেন সেবা দেওয়া হবে।

সবুর খান কলিন্স বলেন, ‘করোনাভাইরাস সারা দেশে মরাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশই হিমশিম খেয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখনও খাচ্ছে। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ, তার সাধ্যমত করোনা পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। তবে সম্পদের অপ্রতুলতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অক্সিজেন কমে যাওয়া করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ পর্যায়। অক্সিজেন কমার ফলে মানুষ মারাও যেতে পারে। কিন্তু সবক্ষেত্রে সবসময় অক্সিজেন সহজলভ্য নাও হতে পারে। অক্সিজেনের অভাবে যেন কেউ মারা না যান সেইজন্য ক্ষুদ্র সামর্থ্য নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি। যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসলে আশা করি অক্সিজেনের অভাবে কেউ মারা যাবে না।’