বাংলাদেশে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প

SHARE

house of commansবাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৃটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে আবোরো আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় প্রায় সকল বক্তা ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। তারা সংকট নিরসনে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি জাতীয় নির্বাচনই বিকল্প বলে মত প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার লন্ডন সময় বিকেলে হাউস অব কমন্সের একটি রুমে বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত প্রায় দেড়ঘণ্টার এই আলোচনা সভায় বৃটিশ লর্ড সভার সদস্য, ব্যারোনাস, এমইপি ও এমপিসহ মোট ১১ জন অংষ নেন। তারা বাংলাদেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বৃটিশ এমপি লর্লি বাট। সভায় মতামত রাখেন বৃটিশ লর্ড সভার সদস্য লর্ড কোরবান হোসেন, ব্যারোনাস পলা মঞ্জিলা উদ্দিন, স্টিফেন ডরোথি এমপি, জন হেমিং এমপি, সাইমন ডানসাক এমপি, জিম কুনিংহাম এমপি, খালেদ মাহমুদ এমপি, রবিন ওয়াকার এমপি, সাবেক এমইপি ফিল বেনিয়ন, এ্যান্ড্রুস স্টানেল এমপি।

সভায় সায়মন ডানসাক এমপি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,  ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে কবর দেয়া হয়েছে। এই নির্বাচনে জনগনের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেনি। সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হওয়ায় বৃটেনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর কাছে তা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তাই  সংকট নিরসনে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই।

জন হেমিং এমপি বলেন, উন্নয়নসহযোগী দেশ হিসেবে বৃটেন বাংলাদেশে রাজনৈতিক  স্থিতিশীলতা দেখতে চায়। তিনি জানান, র্যা ব, পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সাধারণ জনগণের উপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জড়িত হওয়ায় বৃটেন তাদেরকে আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ বন্ধ করে দিয়েছে। বৃটেন এমন কোনো বাহিনীকে প্রশিক্ষণ বা আর্থিক সহায়তা দেবে না, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত।

বৃটেনসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে জানিয়ে সভায় বক্তারা বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য ন্যূনতম যে ইস্যুতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে আসা যায়- সেটা হলো তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থার মাধ্যমে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন।

সভায় বক্তারা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ রাখা, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং রাজনৈতিক নেতাদের জেল, নির্যাতন,  হত্যা,গুমসহ সরকারের বিভিন্ন অগণতান্ত্রিক আচরণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এসব কর্মকান্ড রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে অন্তরায়। বক্তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র  ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সংলাপে বসার আহ্বান জানান। সংলাপের জন্য প্রয়োজনে বৃটিশ পার্লামেন্ট থেকে একটি ডেলিগেশন পাঠানোর প্রস্তাবও করেন বক্তারা।-    ওএনবি