করোনার মাঝেও বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা

SHARE

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর গত মে মাসে সারা দেশে ১৩০টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফাঁকা সড়ক ও মহাসড়কে বেপরোয়া গতির কারণেই এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সাইফুন নেওয়াজ বলেন, ‘৯০ শতাংশ দুর্ঘটনার বড় কারণ চালকের বেপরোয়া গতি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁরা দুর্ঘটনা ঘটান। সাধারণ ছুটির সময়ে সড়ক ও মহাসড়কে পুলিশের তৎপরতা কম থাকায় দুর্ঘটনা বেড়েছে।’

নওগাঁর মহাদেবপুরে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে ট্রাকের ধাক্কায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন গত শুক্রবার রাত ১২টায়। তার আগের দিন রাজধানীর মিন্টো রোডে বিপরীত দিক থেকে আসা দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মারা যান দুজন। ২৭ মে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কে ট্রাক্টরের সঙ্গে সিএনজির সংঘর্ষে নিহত হন দুজন। একই দিন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় মারা যান আপন দুই ভাই। একই দিন ঝিনাইদহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীসহ দুজন নিহত হন। ২৬ মে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় দুই রিকশাচালক নিহত হন। একই দিন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ দুজন মারা যান। গত ২২ মে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার জুনদহ এলাকায় রডবোঝাই ট্রাক উল্টে ১৩ জন নিহত হন। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ট্রাকে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছিল। লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঈদের ছুটিতে রডবোঝাই ওই ট্রাকের ওপর ত্রিপল বিছিয়ে ঢাকা থেকে রংপুরে যাচ্ছিলেন যাত্রীরা।

এদিকে গত ২০ মে বেতনের টাকা তুলে বাড়ি ফেরার পথে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় পিকআপের ধাক্কায় লাশ হন এক মোটরসাইকেল আরোহী। একই দিন নরসিংদীর রায়পুরায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের গাড়ির সঙ্গে প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পান মন্ত্রী। ১৯ মে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত হন। সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, যশোর, ঝালকাঠি, নাটোর, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যানুসারে, স্বাভাবিক সময়ে দেশে দিনে গড়ে ১০টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দিন তার চেয়েও বেশি দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রকাশিত সংবাদের তথ্য থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। এ ছাড়া করোনাকালে মে মাস জুড়ে মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা ঘটতে থাকে। এসব দুর্ঘটনার পেছেনে ছিল ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস।