ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে রেড ক্রিসেন্ট

SHARE

ঘূর্ণিঝড় “আম্ফান” মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। ইতোমধ্যে, উপকূলীয় ১৩ জেলাসহ চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটসমূহকে সবধরণের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেছে সোসাইটির জাতীয় সদর দপ্তর। এছাড়াও প্রস্তুত রাখা হয়েছে এনডিআরটি (ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স টিম), ইউডিআরটি (ইউনিট ডিজাস্টার রেসপন্স টিম) সহ সবকয়টি উপকূলীয় জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের স্বেচ্ছাসেবকগণ ও ইউনিট কর্মকর্তাদের। ঘূর্ণিঝড় পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে উপকূলীয় অঞ্চলের সাইক্লোন শেল্টারে সম্ভাব্য আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৩০ হাজার লোকের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, সাইক্লোন শেল্টারে আসা লোকজন যেন সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে ব্যাপারে স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ বিতরণসহ নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানায়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে জনগণকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে উপকূলীয় অঞ্চলের ২২টি সাইক্লোন শেল্টারকে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরা যাতে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করতে পারে সেজন্যও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে বৈশি^ক মহামারি করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মোকাবিলায় ঘূর্ণিঝড়কালিন সময়ে কর্মরত বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির যৌথ কর্মসূচি “দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) এর কর্মরত স্বেচ্ছাসেবকদের স্বান্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে উপকূলীয় ১৩ জেলার সিপিপি (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ (হ্যান্ড স্যানটাইজার, সার্জিকাল মাস্ক, স্প্রে মেশিন, জীবাণুনাশক সাবান) প্রদান করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, আজ সোমবার সকাল ১১টায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে “জুম” ভার্চুয়াল মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। মিটিং এ সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব মো: ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন। সোসাইটির উপমহাসচিব মো: রফিকুল ইসলাম, মো: বেলাল হোসেন পরিচালক ডিআরএম, মো: মিজানুর রহমান, পরিচালক, ডিজাস্টার রেসপন্স (ডিআর), টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট ক্লাইমেট সেন্টার, আইএফআরসি ও রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট মুভমেন্ট পার্টনারের প্রতিনিধিগণ অংশ নেয়।

সভায়, এ মুহূর্তে উপকূলীয় ১৩টি জেলার মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৬টি জেলায় (সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালি) পূর্বাভাস ভিত্তিক (এফবিএ) কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত আনার পর উপকূলীয় অন্যান্য জেলা গুলোতেও কার্যক্রম বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় “আম্পানে” ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য “ডিজাস্টার রেসপন্স ইমারজেন্সি ফান্ড (ডিআরইএফ) সংগ্রহেরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

উপকূলীয় ১৩ জেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে শেল্টারে অবস্থানরতদের তাৎক্ষণিক খাদ্য চাহিদা মেটাতে জরুরী খাবার, পানি সরবরাহের পাশাপাশি করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ (মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, জীবাণুনাশক সাবান) প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটে ৩৯,৫০,০০০,০০ টাকা ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে সবেচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৬টি জেলায় এই টাকা ব্যয় করা হবে বলে রেড ক্রিসেন্ট কৃর্তপক্ষ জানায়।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব মো: ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে নিরাপদ স্থানে অর্থাৎ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তারা যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করতে পারে সেদিকটি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা হবে। এছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রে প্রবেশের আগে প্রত্যেককে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, জীবাণূনাশক সাবানসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে, যাতে তারা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে পারে।