কভিড-১৯ শনাক্তে যেভাবে কাজ করবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট

SHARE

কভিড-১৯ সনাক্তে র‍্যাপিড কিট ‘জিআর কভিড-১৯ ডট ব্লট’ হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) কাছে এই কিট হস্তান্তর করেছে তারা। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক লিমিটেডের গবেষকরা কিটটি তৈরি করেছেন। এখন এগুলো সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে পরীক্ষার আগে এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চান না সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

আজ শনিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এ কিট হস্তান্তর করা হয়। তবে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য করোনাভাইরাস টেস্টিং কিট সরকারের কাছে হস্তান্তরের কথা থাকলেও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল না সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন যে, তাদের ১০ হাজার কিট প্রস্তুত আছে যার মধ্যে পরীক্ষার জন্য কয়েকশো নিতে পারে সরকার। তিনি বলেন, ‘এটা দিচ্ছি তারা (সরকার) যাতে কম্পারিজন (তুলনা) করতে পারে। আশা করছি এই কিট দেয়ার পর কিছুদিনের মধ্যে সরকার চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে। অনুমোদন পাওয়ার পর পর্যায়ক্রমে এক লাখ কিট দেয়া হবে।’

এর আগে গত ২০শে এপ্রিল কিট জমা দেয়ার কথা থাকলেও বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ল্যাবে যান্ত্রিক ত্রুটি তৈরি হওয়ায় সেই ব্যাচটি বরবাদ হয়ে যায়। ফলে পুরো ব্যাচটিই নতুনভাবে তৈরি করতে হয়েছে। যার কারণে ঠিক সময়ে সেগুলো হস্তান্তর করা যায়নি।

যেভাবে কাজ করবে এই কিট

ব্লাড গ্রুপ যে পদ্ধতিতে চিহ্নিত করা হয়, র‍্যাপিড ডট ব্লট নামের এই কিট অনেকটা একই রকম পদ্ধতিতে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বলেন, মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই এই কিট দিয়ে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব হবে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলছেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য র‍্যাপিড টেস্ট কিটগুলোয় সাধারণত শুধু অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয়ে থাকে – যেটা ভারতে হয়েছে। ফলে সেখানে অনেক সময় ভুলভ্রান্তি হতে পারে। আমাদের এই কিটে অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন, দুইটাই পরীক্ষা করা হবে।’

তিনি জানান, সিরিঞ্জের মাধ্যমে তিন সিসি রক্ত নেয়ার পর সেটার সিরাম আর সেল আলাদা করে ফেলা হবে। পরে সেটা থেকে অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে দেখা হবে। সব মিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে ১৫ মিনিট সময় লাগবে বলে তিনি জানান। এর মধ্যেই বোঝা যাবে যে, রক্তদাতা করোনাভাইরাস পজিটিভ নাকি নেগেটিভ।

এই কিটগুলো ব্যবহার করে তারা ৯৩ শতাংশের বেশি সাফল্য পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সংক্রমিত বাংলাদেশিদের রক্তের উপর গবেষণার পরই এসব কিট তৈরি করা হয়েছে। এর আগে সরকার ৫টি রক্তের নমুনা পাঠানোর পর সেগুলোর উপর গবেষণা চালানো হয়।

কী সুবিধা দেবে এসব কিট?

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলছেন, “লকডাউন তুলে দেয়ার পর দেশ বিদেশ থেকে অনেক মানুষ আসতে শুরু করবে। তাদের দ্রুত পরীক্ষা করতে হবে। সেজন্য এই টেস্ট কিটগুলো উপকারে আসবে।”

তিনি জানান, এসব কিট ব্যবহার করতে স্বাস্থ্যকর্মীদের সহজেই প্রশিক্ষণ দেয়া সম্ভব। ফলে দেশের যেকোনো স্থানে এই কিট ব্যবহার করে করোনাভাইরাস রোগীদের দ্রুত শনাক্ত করা যাবে। বিশেষ করে বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোয় বেশি কাজে আসবে।

এই কিটগুলোর দাম কতো হতে পারে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

সূত্র- বিবিসি বাংলা।