‘পুলিশকে মানুষের প্রথম ভরসাস্থল হিসেবে তৈরি করতে চাই’

SHARE

দেশে করোনাভাইরাসের এই উদ্ভূত পরিস্থিতি অপরাধ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ছাড়া কোথাও কোথাও চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সাইবার অপরাধ, অর্থনৈতিক অপরাধ, প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ বন্ধ করতে হবে। ভুয়া সংবাদ, গুজব বন্ধ করতে হবে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে কার্যকর থাকা লকডাউন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অপ্রয়োজনে মানুষের চলাচল সীমিত করতে হবে। সরকারি ত্রাণ বিতরণ এবং ওএমএসের চাল বিতরণে যেকোনো অনিয়মরোধে ভূমিকা রাখবে পুলিশ। এ জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে।

আজ শনিবার দুপুরে এক ভিডিও কনফারেন্সে পুলিশের সকল রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ও বিশেষায়িত ইউনিটে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এই দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন পুলিশের নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

আইজিপি বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য এ সময় খোলাস্থানে অথবা ফুটপাতে বাজার বসাতে হবে। বাজারে একমুখী চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে কমপক্ষে ২০ ফুট দূরত্ব বজায় থাকে। চায়ের দোকানে আড্ডা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ প্রশাসন গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে আইজিপি বলেন, কোনো পুলিশ সদস্য অবৈধ আয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তাকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। পুলিশের কাজের মূল ভিত্তি হবে টিম স্পিরিট। এককভাবে নয়, পুলিশ সদস্যদেরকে টিমে কাজ করতে হবে। আমরা পুলিশকে প্রযুক্তিনির্ভর, আধুনিক ও স্মার্ট পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

মাদকের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা বাংলাদেশে আর মাদক দেখতে চাই না। আমরা মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।

আইজিপি বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ এর স্বপ্নপূরণে পুলিশকে মানুষের প্রথম ভরসাস্থল হিসেবে তৈরি করতে চাই। বর্তমানে পুলিশের অনেক সক্ষমতা রয়েছে। এ সক্ষমতা কাজে লাগাতে হবে। এ সময় জনগণের পাশে থাকতে হবে। মানুষের সঙ্গে কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করা যাবে না, শারীরিকভাবে নির্যাতন করা যাবে না। মানবিক আচরণ করতে হবে।

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কেউ পণ্যের মজুতদারি অথবা মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক রাখতে হবে।

পুলিশ প্রধান বলেন, ফোর্সের কল্যাণে কাজ করতে হবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনকালে কোনো পুলিশ সদস্য অসুস্থ হলে তার চিকিত্সায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

দেশে দুই লাখ ১২ হাজার পুলিশ সদস্যের প্রত্যেককে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সকলকে দেশের কল্যাণে এবং রাষ্ট্রের অগ্রগতি ও উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

এর আগে আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ বীরাঙ্গনাসহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মোত্সর্গকারী সকল শহীদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এ সময় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন।