জাহাজ জরিপে তিন হাজার টাকা ওভার টাইম নিচ্ছে নৌ বাণিজ্য দপ্তর

SHARE

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ ছুটির মধ্যে কাস্টমস, বাণিজ্যিক ব্যাংক, উদ্ভিদ সংগনিরোধ দপ্তরসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অর্থনীতি সচল রাখতে নিরলসভাবে কাজ করছে। কার্যক্রম সচল রেখেছে চট্টগ্রাম বন্দর ও বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। তারা বাড়তি প্রনোদনা ছাড়াই করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাজ করছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতি কমাতে এবং দ্রুত পণ্য ছাড় করতে স্টোর রেন্ট পর্যন্ত মাফ করেছে। কিন্তু ব্যতিক্রম সরকারি নৌ বাণিজ্য অধিদপ্তর। সরকারি ছুটির মধ্যে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি উল্টো ওভারটাইম হিসেবে প্রতি জাহাজের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকার করে মাশুল আদায় করছে। ২৬ মার্চ থেকে এই সাধারণ ছুটির পর এই মাশুল আদায় শুরুর প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন।

ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, কঠিন দুঃসময়ে সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে নিরলসভাবে যখন কাজ করছে তখন সরকারী নৌ বাণিজ্য দপ্তর সার্ভেয়ারদের অধিকাল ভাতা হিসেবে বাড়তি প্রতি জাহাজের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বাবদ বাড়তি তিন হাজার টাকা আদায় করছে। এটা অযৌক্তিক অন্যায়।এটা বন্ধ করা উচিত।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের স্টোর রেন্ট মাফ করেছে; কন্টেইনার রাখার ভাড়া কমানোর জন্য আবেদন করেছে বিজিএমইএ। সরকার প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার চেষ্টা করছে ঠিক এমন সময়ে বাড়তি মাশুল আদায় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

জানা গেছে, বিদেশ থেকে যে জাহাজ পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর জলসীমায় পৌঁছে সেই জাহাজের জন্য নো অবজেকশন সার্টিফিকেট জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। নৌ বাণিজ্য অধিদপ্তরের সার্ভেয়ার সরাসরি বহির্নোঙরে অবস্থানরত গিয়ে সরেজমিনে দেখে সেই সনদ দেন। আর সনদ নিয়ে কাস্টমস, বন্দরে জমা দিয়ে পণ্য ছাড়ের অনুমতি পান আমদানিকারক। সনদ নিতে গিয়ে বিদ্যমান সরকারি সাধারণ মাশুল পরিশোধ করেন শিপিং এজেন্টরা। এখন সরকারি সাধারণ ছুটি শুরুর পর থেকে নৌ বাণিজ্য অধিদপ্তর প্রতি জাহাজের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বাবদ বাড়তি তিন হাজার টাকা আদায় শুরু করছে।

হিসাব কষে দেখা গেছে, দিনে ৮-১০টি জাহাজের সার্ভে সনদ দেওয়া হয় তবে রবি ও বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা বেড়ে ১৫-২০টিতে উন্নীত হয়। ফলে দিনে ৩০ হাজার টাকার বাড়তি মাশুল আদায় করছে সরকারি নৌ বাণিজ্য দপ্তর।

জানতে চাইলে নৌ বাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাড়া না দেওয়ায় মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে শিপিং এজেন্টদের পক্ষ থেকে মাশুল বাতিলের লিখিত প্রতিবাদের জবাবে তিনি লিখেন সরকারি আদেশ মেনেই এই অধিকাল ভাতা আরোপ করা হয়েছে। এই দপ্তরের পক্ষে সেটি বাতিলের এখতিয়ার নেই।