করোনা রোধে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন ও ফ্রি বিতরণ

SHARE

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশবাদী যুব সংগঠন ‘গ্রীণ ভয়েস’। সংগঠনের কর্মীরা নিজস্ব উদ্যোগে নিজেরাই হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে তা নিম্নআয়ের মানুষদের মাঝে বিতরণ করছে। একইসঙ্গে খাদ্য সংকটে থাকা রাজধানীর শ্রমজীবী মানুষদের মধ্যে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই অবস্থাকে পুঁজি করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী জীবানুরোধক হ্যান্ড স্যানিটাইজার পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অধিক মুনাফায় মানুষের কাছে বিক্রি করছে। আর এই অসাধু ব্যবসায়ীদের রুখে দিতে এবং বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতেই বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে যুব সংগঠন ‘গ্রীণ ভয়েস’ এর কর্মীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বেচ্ছাশ্রমে স্যানিটাইজার উৎপাদন ও বিতরণ করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর লালমাটিয়ার ডি ব্লকের একটি ভবনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনের কাজ করছে গ্রীণ ভয়েসের কর্মীরা। বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা অনুযায়ী, ৭০ শতাংশ আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল, গ্লিসারিন, লেমন ওয়েল ও ডিস্টিলড ওয়াটার ব্যবহার করে এই স্যানিটাইজার তৈরি করা হচ্ছে। গত তিন দিন ধরে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন ও বোতলজাত করার পাশাপাশি তা বিনামূল্যে (ফ্রি) বিতরণ করা হচ্ছে। বিতরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

গ্রীণ ভয়েসের প্রধান সমন্বয়কারী আলমগীর কবীর জানান, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও আমাদের প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা পেশাজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার। সেই বিবেচনা থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন ও বিতরণ কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মানুষ গৃহবন্দি হয়ে যাওয়ায় শ্রমজীবী মানুষরা সব থেকে বিপাকে পড়েছে। প্রতিদিনের খাবার যোগাড় করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই তাদের মধ্যে খাবার সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে এই কার্যক্রম শুরু হবে।

তিনি আরো বলেন, সম্পূর্ণ ব্যক্তি অনুদানের এই কার্যক্রম চলছে। তাই এই কাজে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

সংগঠনের উপদেষ্টা ও সাবেক ছাত্রনেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, এই প্রকল্পের কাজ চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বোতল, কেমিক্যালসহ অন্যান্য কাঁচামালের সংকট ও উচ্চমূল্য বড় বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে। আর
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জন্য অর্থ সংকট তো আছেই। তাই দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষদের কথা বিবেচনায় নিয়ে কাঁচামালের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তায় সকলে এগিয়ে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠি, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, জুম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন ও বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। জেলায় জেলায় তরুণদের স্বত:স্ফূর্ত উদ্যোগও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।