মিরপুরের করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তি নিজে কিংবা তাঁর পরিবারের কেউ বিদেশফেরত ছিলেন না। আজ শনিবার তাঁর মৃত্যুর পর তিনি ওই হাসপাতাল–সংলগ্ন যে বাসায় থাকেন, সেটি কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) নির্দেশে বাসাটিকে কোয়ারেন্টিন করা হয় বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর বন্ধ রাখা হয়েছে ওই হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। কোয়ারেন্টিনে আছেন আইসিইউর চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয়রা। এ বিষয়ে হাসপাতাল বা আইইডিসিআরের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই হাসপাতালের একজন চিকিৎসক প্রথম আলোকে বলেন, রোগী গত মঙ্গলবার কল্যাণপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। তাঁর হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষার পরও রোগ ধরা পড়েনি। সেখানে অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় ১৭ মার্চ পৌনে পাঁচটার দিকে কল্যাণপুরের ওই হাসপাতাল থেকে থেকে তাঁকে মিরপুরের হাসপাতালটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাঁর শ্বাস–প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়ায় তাঁকে একজন বক্ষব্যাধি চিকিৎসক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন। তিনিই প্রথম আশঙ্কা করেন রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন।
ওই হাসপাতাল এ বিষয়ে আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা নমুনা সংগ্রহ করতে অস্বীকৃতি জানায়। বলা হয়, ওই ব্যক্তি বিদেশফেরত নন, তিনি বিদেশফেরত কারও সংস্পর্শেও আসেননি। কিটের স্বল্পতা আছে। ওই চিকিৎসক আরও বলেন, রোগী হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁর ব্যাপারে সরকারের উচ্চপদস্থ লোকজন খোঁজখবর করেন। তাঁদের তদবিরেই পরে পরীক্ষা করা হয়। গতকাল মিরপুরের ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় রোগী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।
মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাক আহমেদ প্রথম আলোকে একটি বাড়ি কোয়ারেন্টিনের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, টোলারবাগের ওই বাসার এক সদস্যের মৃত্যু হলে তাঁরা আইইডিসিআরের নির্দেশে বাসাটিকে কোয়ারেন্টিন করেন। বাসাটি যে ভবনে, সেটির বাসিন্দারাও সতর্কতার অংশ হিসেবে বের হচ্ছেন না। আইইডিসিআরের নির্দেশনা মেনে মৃত ব্যক্তিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তি নিজে বা তাঁর পরিবারের কেউ বিদেশ থেকে এসেছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো খবর তাঁদের জানা নেই। মৃত ব্যক্তি অবসরপ্রাপ্ত ছিলেন, তাঁর বয়স ৭৩।