১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি শুরু হওয়া প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের পর গতকাল সোমবারই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম এক দিনের কেনাবেচায় সর্বোচ্চ কমেছে। গতকাল এক দিনেই জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ৩৩ শতাংশ। করোনা মহামারির প্রভাব যেন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ব তেলের বাজারে।
গতকাল তেলের বাজারে দিনভরই অস্থিরতা ছিল। একপর্যায়ে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম কমে ২৭ দশমিক ৩৪ ডলারে নেমে আসে। ২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির পর এটি বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের সর্বনিম্ন দর। লেনদেনের এর আগে-পরে অবশ্য ব্যারেলপ্রতি কখনো ৩৩ দশমিক ৮৯ ডলার, কখনোবা ৩১ দশমিক শূন্য ২ ডলার, কখনো ৩০ দশমিক ১৬ ডলারে কেনাবেচা হয়। শেষ লেনদেন হয় ৩৩ দশমিক ১৫ ডলারে।
সিএনএনের এক বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, বিশ্বের অন্যতম তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরব গত সপ্তাহে শেষে তেলের ‘দাম-যুদ্ধ’ শুরু করায় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গত শুক্রবার তেলের দাম বাড়ানোর জন্য উৎপাদন কমাতে ওপেক ও রাশিয়া কোনো চুক্তিতে না পৌঁছাতে পারায় পরদিন সৌদি আরব তাদের তেলের দাম কমিয়ে দেয়। শুরু হয় তেলের ‘দাম-যুদ্ধ’। এমনিতেই কয়েক মাস ধরে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বব্যাপীই জ্বালানির চাহিদা কমে গেছে। করোনার কারণে চীন থেকে প্রতিদিন এক কোটি ব্যারেল তেলের চাহিদা কমে গেছে।
ক্রমহ্রাসমান চাহিদা কমার কারণে দাম কমায় কে যে লাভবান হবে, তা বলা মুশকিল। প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর তেল কোম্পানিগুলো বাজারে শেয়ারের দর হারাতে শুরু করেছে। রাশিয়ার দাবি, দাম কমে যাওয়ায় তাদের অর্থনীতিতে তেমন প্রভাব পড়বে না। কারণ, ব্যারেলপ্রতি ৪০ ডলার ধরে বাজেট পরিকল্পনা করে রাশিয়া।
উপসাগরীয় দেশগুলো, যেমন: সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত তেলনির্ভর অর্থনীতি। এসব দেশের সরকারি ব্যয় অনেক বেশি। নিজেদের আয়–ব্যয়ের হিসাব মেলাতে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম অন্তত ৭০ ডলার হওয়া প্রয়োজন তাদের জন্য। এ ছাড়া তেল রপ্তানিনির্ভর দেশ, যেমন: ইরাক, ইরান, লিবিয়া ও ভেনেজুয়েলাকে চড়া মূল্য দিতে হবে। পার পাবে না যুক্তরাষ্ট্রও। কম দাম দেশটির তেল কোম্পানিগুলোকে ভালোই আঘাত করবে।