সাভার থানার ওসিসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

SHARE

মামলা না নিয়ে অপহরণকারীদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে ঢাকার সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও চার পুলিশ কর্মকর্তাসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক মানবাধিকারকর্মী। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কামরুন্নাহারের আদালতে এই মামলা করা হয়।

‘মানবাধিকার খবর’ নামে মাসিক পত্রিকার সম্পাদক ও মানবাধিকারকর্মী রিয়াজ উদ্দিন এই মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার আসামিরা হলেন সাভার থানার ওসি এফ এম শাহেদ হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাকারিয়া, উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলি, সাভার থানার ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক, বৃষ্টি নামে এক নারী, তার স্বামী শুধাংশ রায় এবং নয়ন কুমার ও রনি। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদী রিয়াজের সঙ্গে গত বছর ডিসেম্বরে আসামি বৃষ্টির ফেসবুকে পরিচয় হয়। বৃষ্টি বাদীকে একটি ছেলেসহ বিভিন্ন অসহায়ত্বের কথা বলেন। বাদী মানবাধিকারকর্মী হওয়ায় তার কাছে সহায়তা চান এবং সরেজমিনে অসহায়ত্ব দেখে প্রতিবেদন প্রকাশের অনুরোধ করেন। বাদী সরল বিশ্বাসে আসামি বৃষ্টির কথায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি হেমায়েতপুরের বালুর মাঠের সোহরাব হোসেনের বাড়িতে দুপুর ১টার দিকে যান। সেখানে তিন-চারজন ছেলে তাকে বৃষ্টির ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে ঢোকার পর দরজা বন্ধ করে তাকে বেঁধে মারধর করে টাকা-পয়সা ( নগদ ১০ হাজার টাকা), মোবাইল, ক্যামেরা, এটিএম কার্ড নিয়ে যান। এরপর নির্যাতন করে এটিএম কার্ড ও বিকাশের পিন নম্বর নিয়ে ৬ হাজার টাকা তুলে নেন। এরপর বাদীর মোবাইল নম্বর থেকে তার স্ত্রীসহ বিভিন্ন জনকে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। কিন্তু পরে কোনো মুক্তিপণ না পেয়ে বিকেল ৪টার দিকে সাভার এলাকায় ছেড়ে দেন। এরপর বাদী সাভার থানায় যান এবং এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।

সাভার থানার ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই এনামুল হক ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে অভিযান চালিয়ে বৃষ্টি, নয়ন কুমার, রনি ও অজ্ঞাত এক নারীকে থানায় নিয়ে আসেন। থানায় আসার পর মামলার প্রস্তুতির একপর্যায়ে পুলিশ বাদীকে আসামিদের সঙ্গে সমঝোতা করতে বলেন। সমঝোতা না করলে উল্টো ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির মামলায় বাদীকে মামলা দিয়ে আদালতে চালানের ভয় দেখান। পরে বাদীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে থানা ছাড়তে বাধ্য করেন। এরপর বাদী জানতে পারেন আটকরা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। তাদের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ওসিসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা আটককারীদের ছেড়ে দেন।