স্থানীয় বাজার থেকে দরপত্রের মাধ্যমে ৩০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত সয়াবিন তেল কিনবে সরকার। এ ছাড়া ২৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত চিনিও কেনা হবে। পরিশোধিত তেল সরবরাহ করবে ‘সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড’ এবং ‘বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড’। আর পরিশোধিত চিনি সরবরাহ করবে ‘সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের মাধ্যমে এগুলো কেনা হবে। আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপণ্যের চাহিদা ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এগুলো কেনা হচ্ছে। এ দুটি প্রস্তাবসহ আটটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ‘সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৯০৯ কোটি টাকা। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ ক্রয় প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয় বাজার থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত সয়াবিন তেল কেনা হবে। একই সঙ্গে ২৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত চিনি দরপত্রের মাধ্যমে সরাসরি কিনবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এগুলো কেনা হবে টিসিবির মাধ্যমে।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জানান, ১৫ হাজার মেট্রিক টন করে মোট ৩০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে ‘সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড’ এবং ‘বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড’। এতে মোট ব্যয় হবে ২৯৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সরবরাহকৃতব্য তেলের মধ্যে পাঁচ হাজার মেট্রিক টনের সমপরিমাণ দুই লিটারের পেট বোতল এবং ২৫ হাজার মেট্রিক টনের সমপরিমাণ পাঁচ লিটারের পেট বোতল তেল রয়েছে। প্রতি লিটার তেলের মূল্য যথাক্রমে ৯১ টাকা ৯৫ পয়সা এবং ৯০ টাকা ৯৫ পয়সা। তিনি জানান, অন্যদিকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত চিনি সরবরাহ করবে ‘সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’। ট্যাক্স ও টিসিবির গুদামে পরিবহনসহ এতে মোট ব্যয় হবে ১৫৩ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ৬১ টাকা ২৫ পয়সা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ই-জিপি সিস্টেম প্রচলন হওয়ার পর থেকে আমরা ভালো ফলাফল পাচ্ছি। বিশেষ করে আগে বিভিন্ন প্রকল্পের টেন্ডার নিয়ে নানা ধরনের অরাজকতার সৃষ্টি হতো। এ ব্যবস্থা প্রচলনের পর থেকে সেসব আর হয় না। এ ছাড়া সরকারের রাজস্ব বেড়েছে।’
তিনি জানান, ই-জিপি সিস্টেম অধিকতর উপযোগীকরণ, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য ডিআইএমএপিপি প্রকল্পের আওতায় ‘বাংলাদেশ ই-জিপি সিস্টেম অ্যানহান্সমেন্ট, অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স (ইওএম)’ শীর্ষক পরামর্শক সেবা ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৫ কোটি ১৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে যৌথভাবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ‘জিএসএস ইনফো টেক লিমিটেড’ ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘নমিনেটেড সাব-কনসালট্যান্ট দোহাটেক নিউ মিডিয়া’।
অর্থমন্ত্রী জানান, বৈঠকে মোংলা বন্দরের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে তিনটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান এসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে। এর সঙ্গে সহযোগী দেশীয় প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে ‘ম্যাক্সোন পাওয়ার লিমিটেড’। তিনটি ক্রয় প্রস্তাবে মোট ব্যয় হবে ১৯৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
তিনি জানান, এ ছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-১ : ডেভেলপমেন্ট অব শেওলা, ভোমরা রামগড় ল্যান্ড পোর্ট অ্যান্ড আপ-গ্রেডেশন অব সিকিউরিটি সিস্টেম অব বেনাপোল ল্যান্ড পোর্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ডেভেলপমেন্ট অব শেওলা ল্যান্ড পোর্ট (প্যাকেজ নং বিএলপিএ /ডাব্লিউ-২) প্যাকেজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে ‘এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’ এবং ‘মেসার্স অনিক ট্রেডিং করপোরেশন’।