অর্থবিত্ত দেখে কাউকে দলীয় পদ দেওয়া যাবে না : তথ্যমন্ত্রী

SHARE

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কারো অর্থবিত্ত দেখে আওয়ামী লীগে কোনো পদ-পদবী দেওয়া যাবে না। অমুকের পয়সা আছে, দল চালাতে সুবিধা হবে-এই বিবেচনায় কাউকে পদ দেওয়া যাবে না। এটি আমাদের দলের রাজনীতি ও আদর্শ নয়। আজ শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পাবনা জেলা শাখার তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, পরপর তিনবার ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের মধ্যে অনেক সুবিধাবাদি ও অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। যারা এক সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করেছে এবং নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। তারা এখন এই সংগঠনের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। যারা সুবিধাভোগের জন্য দল করছেন তাদের চিহ্নিত করে পদ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। দল ও আদর্শের প্রতি নিষ্ঠা এবং নেত্রীর প্রতি একাগ্রতাই হবে দলীয় পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতা।

হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায়। এই কৃতিত্ব জননেত্রী শেখ হাসিনার। তিনি সমস্ত প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ধীরস্থির থেকে সমস্যা মোকাবেলা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশে পদার্পণ করেন। এরপর বঙ্গবন্ধুহীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে মায়ের মমতায় বোনের স্নেহে লালন করে বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসেছেন। আরো প্রত্যয়ী হয়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং আওয়ামী লীগকে চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় নিয়ে গেছেন।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সংকটে পড়েছে তখন অনেক বড় নেতা বোল পাল্টিয়েছে, অনেকে দল ছেড়ে চলে গেছে। এটি শুধু শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে ঘটেছে তা নয়। জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু যখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছে তখনও ঘটেছে। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের জন্মের পর থেকে সমস্যার বাঁকে বাঁকে অনেক নেতা বাঁকা হয়ে দল থেকে চলে গেছে। দলের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছে। কিন্তু তৃণমূলের কর্মীরা কখনো দলের সাথে বেঈমানি করেনি। তৃণমূল সবসময় দল ও নেতার সাথে ঐক্যবদ্ধ থেকেছে, বিশ্বস্থতার সাথে কাজ করেছে। সেই কারণে আওয়ামী লীগ আজ দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল এবং পরপর চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায়।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, পরপর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের অনেকের মধ্যে আলস্যতা এসেছে। এই আলস্য ঝেড়ে ফেলতে হবে। দলের কারণে সরকার, সরকারের কারণে দল নয়। আমাদের মূল ঠিকানা দল। সুতরাং সবাইকে দলকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা যারা নির্বাচিত এমপি, মন্ত্রী থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যান পর্যন্ত সবার মূল ঠিকানা হচ্ছে দল। সবাই এখন দলীয় প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। দলের কারণে সবাই আমরা পদের মধ্যে আছি। সুতরাং দায়িত্ব পালন করার সময় দলের নেতাকর্মীদের গুরুত্ব দিতে হবে।

দলের তরুণ নেতাকর্মীদের বিনয়ী হবার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বদলে গেছে। যেই ছেলে ১০ বছর আগে বিদেশ গেছে সে দেশে এসে তার শহর চিনতে পারছে না, গ্রামও চিনে না। কিন্তু এত উন্নয়নের মধ্যেও যখন আমাদের কর্মীরা উদ্যত আচরণ করে তখন মানুষ বিরক্ত হয়। আমরা কেউ যেন উদ্যত আচরণ না করি। কারো উদ্যত আচরণ ও অপকর্মের দায় দল কখনো নিবে না। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল রহিম লালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুখ প্রিন্স এমপির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা, বেগম আখতার জাহান।