‘নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয় এমন কিছু আওয়ামী লীগ করবে না’

SHARE

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয় এমন কিছু আওয়ামী লীগ করবে না। তিনি বলেন, আমরা ঘরোয়াভাবে অফিসে সভা করতে পারবো। আমরা একটা মহল্লায় গিয়ে ঘরের মধ্যে সভা করতে পারবো। সেগুলোতে কোনো বাধা নেই।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সুন্দর, গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। যেহেতু আমরা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল, এমন কোনো কাজ করবো না যাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সে প্রসঙ্গ বলতে গিয়েই আমরা লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, আচরণ বিধিতে বলা আছে- সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী, সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। এই যে সুবিধাভোগী এবং অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি-এমপিরা কিন্তু সুবিধাভোগী না। আমিও ব্যক্তিগতভাবে সুবিধাভোগী না।

তিনি বলেন, শেখ সেলিম সাবেক মন্ত্রী, মাহবুব-উল আলম এরা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আব্বাস, গয়েশ্বর সাবেক মন্ত্রী। এরা প্রত্যেকেই কিন্তু মন্ত্রী ছিলেন। তারাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। মওদুদ তো একসময় প্রধানমন্ত্রী, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনিও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।

তোফায়েল বলেন, আচরণ বিধির যে ব্যাখ্যা, এই ব্যাখ্যার মধ্যে স্ববিরোধীতা আছে। আমাদের ব্যাখ্যায় তারা ইসি একমত হয়েছে। কিন্তু তারা ইসি বলেছে, আমাদের কিছু করার নেই। এখন যদি কিছু করি (বিধি সংশোধন) মানুষের চোখে সরকারের জন্য ভালো হবে না। আমাদের চোখেও এটা ভালো হবে না। কিন্তু আপনাদের বক্তব্যটা ঠিক।

তিনি বলেন, সুবিধাভোগী বলতে বোঝায় অফিস অব প্রফিট। আমরা এমপিরা তা পাই না। মন্ত্রিরা পায়। হুইপরা পান। প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার তারা তো পানই। এটাকে কমিশন পরিবর্তন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু সম্ভব হয়নি। আমরাও বলেছি, ঠিক আছে, এটা পরিবর্তন করতে বলবো না। আমরাও মেনে নিয়েছি। কিন্তু মাহবুব তালুকদার সেদিন যে কথা বলেছেন, তিনি আজকেও বলেছেন, তাদের ভেতরের কথা, ওই যে একটা কথা বলেছেন, সেটা হলো-আমি আমার ঘরে, অফিসে বসেও নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলতে পারবো না। বৈঠকে তিনি (মাহবুব তালুকদার) ছাড়া সবাই একমত হয়েছেন যে, এটা বাস্তব সম্মত না।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, মুজিববর্ষে আমরা আগামী এক বছর কর্মসূচি নিতে পারবো। কিন্তু আমাদের মতো যারা এমপি, তারা যেন ভোট না চায়। আমার সঙ্গে যে এমপি নয়, সে কিন্তু ভোট চাইতে পারবে। এজন্য আমাদের আলোচনা খুব পরিষ্কার হয়েছে। খুব ফলপ্রসূ হয়েছে।

তিনি বলেন, আরেকটা বিষয় আমরা উল্লেখ করেছি। শেখ সেলিম, মাহবুব-উল আলম হানিফ, মির্জা আজম আমরা প্রত্যেকেই বক্তব্য রেখেছি। অনেকের নামে মামলা আছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এ নিয়ে ইসির কিছু করার নেই। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, এটা করলেও আমাদের আপত্তি নেই। না করলেও আপত্তি নেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই আলোচনা করে আমরা পরিষ্কার হলাম। আমরা এমপিরা ভোট চাইবো না। কিন্তু মাহবুব তালুকদার যে বলেছেন- আমরা ঘরে বসেও কোনো কিছুই করতে পারবো না, এটা কিন্তু ঠিক না। আমার বাসায় লোক আসবে, আমি কেন কথা বলতে পারব না। এখন একটা মিলাদ মাহফিলে যাচ্ছি। মিলাদ মাহফিলে তো কোনো বাধা নেই।

তিনি বলেন, পথসভা হবে আমরা যাব না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার হয়তো সেটা আমরা করব না। কিন্তু আমরা নির্বাচনী অফিস, যেমন আমাকে শেখ সেলিম, হানিফ, মির্জা আজমকে নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্ব দিয়েছে। আমরা অফিসে বসে পরিকল্পনা করতে পারি। এতে কোনো বাধা নেই। এমপিরা নির্বাচনী কোনো প্রচারে যেতে পারবো না। এটা আমরা মেনে নিচ্ছি।

আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।