ইরানের ৫২ স্থানকে টার্গেট ও ৫২ যুদ্ধ বিমান ওড়ানোর নেপথ্যে

SHARE

গত শুক্রবার ইরানের জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে, ইরান যদি এই হত্যার বদলা নিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পদের ওপর হামলা চালায় তবে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ ৫২টি স্থান এবং স্থাপনায় হামলা চালানো হবে।

এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প ইরানকে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ৫২ স্থানকে টার্গেট করেছে। এর মধ্যে কিছু ইরানের প্রথম সারির এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এগুলো ইরানের সংস্কৃতি এবং ইরানিদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এসব স্থানে খুব দ্রুত ভয়াবহ হামলা চালানো হবে।

এরপর সোমবার ৫২টি এফ-৩৫এ যুদ্ধবিমানের মহড়া শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় উতাহ অঙ্গরাজ্যের একটি ঘাঁটি থেকে ৫২টি সামরিক অস্ত্রে সজ্জিত যুদ্ধবিমানের বিশাল মহড়া চালানো হয়।

এফ-৩৫ মডেলের এই যুদ্ধবিমান অত্যন্ত দক্ষ ও শক্তিশালী। ‘যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হবে’-শক্র বিমান এ বিষয়টি বোঝার আগেই সেটিকে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই বিমানের।

এই বিমানের গতি শব্দের গতির চেয়ে বেশি এবং এগুলো রাডারকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। উচ্চ প্রযুক্তির ক্যামেরার মাধ্যমে পাইলট ককপিটে থেকে বিমানের নিচে ভূমি পর্যন্ত সবকিছুর ছবি ৩৬০ ডিগ্রি কোণে দেখতে পারেন।

এফ-৩৫এ যুদ্ধবিমানের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ব্যয় চার দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। স্থানীয় সময় সোমবার উতাহ অঙ্গরাজ্যের হিল এয়ার ফোর্স বেস থেকে যুদ্ধবিমানগুলো মহড়ার প্রস্তুতি নেয়।

কয়েক মাস ধরেই এই মহড়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। এফ-৩৫ এ বিমানগুলো পুরোপুরি যুদ্ধে অংশ নিতে প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে। ৪১৯তম ফাইটার উইংস এক টুইট বার্তায় বলেছে, আমরা ওড়ার জন্য, যুদ্ধ করতে এবং জয়ী হতে প্রস্তুত রয়েছি।

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের যে ৫২ স্থানকে টার্গেট করেছে সেখানে হামলার জন্যই এই ৫২টি যুদ্ধবিমানের মহড়া শুরু হয়েছে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো ইরানে হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্র কেন এই ‘৫২’ সংখ্যাটিই বেছে নিলো?

এর ইতিহাস অনেকে পুরোনো। ইরানের ইসলামি বিপ্লবের সময় ১৯৭৯ সালের নভেম্বরে তেহরানে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে ৫২ জন আমেরিকানকে জিম্মি করা হয়েছিলো। সেই প্রসঙ্গটিই টেনে আনেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। জিম্মি হওয়া ওই লোকজন ৪৪৪ দিন বন্দি ছিলেন ইরানের বিপ্লবীদের হাতে। ওই ৫২ জনের কথা স্মরণ করেই ইরানের ৫২ স্থানকে টার্গেট করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ‘১৪০ স্থাপনা’ টার্গেট করেছে ইরান। আক্রান্ত হলে তেহরান এই স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাবে বলে পরিকল্পনা নিয়েছে।

ইরানের বিপ্লবী গার্ড সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের দুই দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর নতুন খবরটি পাওয়া গেল।

ইরানের বিপ্লবী গার্ডের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন যদি ফের কোনো ভুল করে তবে তাদের কড়া জবাব দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের ১৪০টি স্থাপনার তালিকা বানিয়ে টার্গেট ঠিক করে রেখেছে ইরান।