সেখানে পড়ে রয়েছে বই হাতঘড়ি ইনহেলার প্যান্ট চশমা

SHARE

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের যাত্রী ছাউনি থেকে গলফ ক্লাবের দূরত্ব ১৫০ থেকে ২০০ মিটার। ক্লাবে প্রবেশের রাস্তার পাশে থরে থরে সাজানো ফুলের গাছ। বোগেনভিলার লাল ফুল ফুটেছে। হেঁটে ওই জায়গাটুকু পার হতে সময় লাগে চার-পাঁচ মিনিট। ফুলগাছ সৌন্দর্য বাড়ালেও বড় বড় ঝোপ সৃষ্টি হয়েছে। সেখানেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করা হয়।

গতকাল সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানের পাশাপাশি সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট আলামত সংগ্রহ করেছে।

গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, লম্বা একটি গাছের আড়াল ও গলফ ক্লাব লাগোয়া বাউন্ডারির পাশে ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করা হয়। গাছের ডালপালার কারণে পাশ দিয়ে কেউ গেলেও বুঝতে পারেনি। পাশে ব্যস্ততম সড়কে গাড়ি চলাচলের শব্দে কারো চিৎকারও বোঝার উপায় নেই।

ধর্ষণস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একটি লম্বা গাছের পাশে ঢালু জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বই-খাতা। থিসিসের নির্দেশনাসংবলিত একটি বইও পড়ে ছিল। শ্রেণিকক্ষের কিছু নোট রয়েছে পড়ে থাকা ব্যাগে। সেখানেই একপাশে পড়ে ছিল একটি হাতঘড়ি ও চশমা। তার পাশে পড়ে ছিল দুটি ইনহেলার। কালো প্যান্ট, একটি টি-শার্ট।

দুপুর পৌনে ১টার পর সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা ঘটনাস্থল কর্ডন করেন। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আলামত সংগ্রহ করার পর জায়গাটি উন্মুক্ত করা হয়।

আগের রাতে ধর্ষণের ঘটনার পর গতকাল সকাল থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরা সদস্যরা ঘটনাস্থল শনাক্ত করতে মাঠে নামেন। পরে গলফ ক্লাবে প্রবেশের ৫০ মিটার আগে স্থানটির সন্ধান পান। এরপর সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়।

আলামত সংগ্রহ করা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ধর্ষণস্থলে ঝোপের মধ্য থেকে বই, দুটি চাবির রিং, কালো প্যান্ট, পুরুষের এক জোড়া স্যান্ডেল, ঘড়ি, দুটি ইনহেলারসহ ১৫টির বেশি আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই স্থানে পড়ে থাকা ফেনসিডিলের বোতলও সংগ্রহ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদিপ কুমার চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলার পর জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সোর্স থেকে তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। আমরা নিবিড়ভাবে তদন্ত করছি। অপরাধীকে চিহ্নিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই জায়গাটি কিছুটা বিচ্ছিন্ন। এখানে জনসমাগমও বেশি থাকে না। অপরাধ করার মতো জায়গা নয় এটি। তবু গাছের আড়ালের সুযোগ নিয়ে অপরাধ করেছে অপরাধী।’

ভিকটিমের মোবাইল ফোন খোয়া গেছে : ধর্ষণের শিকার ঢাবি ছাত্রীর মোবাইল ফোন খোয়া গেছে। প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশেই আছে মোবাইল ফোনটি। সেটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা যায়নি।