দুই মুখোশধারীর প্রবেশ, কুপিয়ে খুন, বস্তাভরা টাকা লুট

SHARE

রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় একটি বাসায় ঢুকে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করে বস্তা ভরা টাকা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার ভোরের এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির কর্মচারী সাইফুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

নিহত ব্যবসায়ীর নাম শাহ মোহাম্মদ তোবারক (৭২)। তিনি মহাখালীর একটি মার্কেটের মালিক। তাঁর বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের চর পাড়ে। তিনি তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন শান্তিনিকেতনের ১৭৮ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলার পুরো ফ্লোর কিনে নিয়েছেন। এই ফ্লোরের একটি ফ্ল্যাটে তিনি একা থাকতেন।

তোবারক চট্টগ্রামের শফি মাইজভাণ্ডারির অনুসারী ছিলেন বলে জানা গেছে।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, তোবারকের ফ্ল্যাটের আলমারি ভাঙা পাওয়া গেছে। সেখান থেকে টাকা লুট হয়েছে বলে জানা গেছে। তোবারকের বাসায় মাইজভাণ্ডারির ভক্তরা আসত। ধারণা করা হচ্ছে, মতাদর্শগত বিরোধে বা টাকা লুটের জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা জানান, ‘বস্তা ভরা টাকা নিয়ে গেছে, এমন তথ্য আমরা পাইনি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

গত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছিল। ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মইনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, মামলা প্রক্রিয়াধীন।

পুলিশ জানায়, শান্তিনিকেতনের ফ্ল্যাটটিতে মোহাম্মদ তোবারকের সঙ্গে থাকতেন সাইফুল নামের এক কর্মচারী বা গৃহকর্মী। যুবক সাইফুল তাঁর দেখাশোনা করতেন। গতকাল ভোরে ফ্ল্যাটের দরজার কল বেলের শব্দ শুনে সাইফুল দরজা খুলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে দুই মুখোশধারী ব্যক্তি ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ে।

নিহতের এক আত্মীয় কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁরা জানতে পেরেছেন দুর্বৃত্তরা সাইফুলকে বেঁধে রেখে তোবারককে কুপিয়ে জখম করে ফ্ল্যাটে বস্তার ভেতর থাকা টাকাসহ মালপত্র লুটে নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা চলে যাওয়ার পর সাইফুল নিজেকে বাঁধনমুক্ত করে পুলিশকে জানান। পরে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তোবারককে উদ্ধার করে মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে তোবারকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

তিনি আরো জানান, মোহাম্মদ তোবারকের স্ত্রী পারভীন আক্তার তাঁর দুই মেয়ে ফাহবি আক্তার ও মাহবি আক্তারকে নিয়ে নিউ ডিওএইচএসে থাকেন। তাঁদের আরেক মেয়ে তানিয়া আক্তার বিবাহিত। তোবারকের তুষার নামের এক ছেলে আমেরিকায় বসবাস করেন। ১৭৮ শান্তিনিকেতনের ফ্ল্যাটে তোবারককে কর্মচারী সাইফুল ১০ বছর ধরে দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন। দু-তিন দিন আগে একটি নতুন ছেলে কাজে যোগ দেয়। ছেলেটির বিষয়ে আর কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

নিহতের ভাগ্নে হোসেন মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা শুনেছেন সাইফুলকে বেঁধে রেখে দুর্বুত্তরা তাঁর মামাকে কুপিয়ে হত্যা করে বাসা থেকে বস্তা ভরা টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পুলিশ সাইফুলকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।

একটি সূত্র জানায়, তোবারক তাঁর ফ্ল্যাটে বস্তায় ভরে লাখ লাখ টাকা রাখতেন। এ হত্যাকাণ্ড ও টাকা লুটের পেছনে সাইফুলের সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।