প্রার্থী হতে চাইলে পদ ছাড়তে হবে দুই মেয়রকে

SHARE

মেয়র সাঈদ খোকন ও আতিকুল ইসলাম। ফাইল ছবি
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলে বর্তমান দুই মেয়রকে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে কাউন্সিলররা নিজ পদে থেকেই নির্বাচন করতে পারবেন।
এ বিষয়ে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বর হচ্ছে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তাই প্রার্থী হতে চাইলে এর আগেই মেয়র সাঈদ খোকন ও আতিকুল ইসলামকে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে।
গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমানের সই করা এক বিশেষ পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘সিটি করপোরেশন একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ বিধায় সিটি করপোরেশনের মেয়র পদটিকে হাইকোর্ট লাভজনক পদ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
কাজেই স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ অনুযায়ী, মেয়র পদে অধিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে ওই ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক হলে, তাকে ওই পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রার্থী হতে হবে। কাউন্সিলর পদধারীরা লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত নয় বলে তাদের পদে থেকে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো বাধা নেই। ’
এ নির্বাচনে আগ্রহী দেশীয় পর্যবেক্ষকদের আবেদন আহ্বান করেছে ইসি। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আগ্রহী পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে আবেদনপত্র দিতে হবে। ইসি সচিবালয়ের পরিচালক (গণসংযোগ) ইসরাইল হোসেনের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো কোন এলাকা বা কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বা স্থানীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে, তা জানানোর বিধান রয়েছে। এ জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের কাছ থেকে চিঠি চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে আরো বলা হয়, নির্দিষ্ট সময়ের পর আবেদন কোনোভাবেই গ্রহণ করা হবে না। আর এ-সংক্রান্ত চিঠি ইসি সচিব বরাবর পাঠাতে হবে।
এ ছাড়া নির্বাচনের মনোয়নপত্রে দলীয় স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম জানতে নিবন্ধিত ৪১ রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়েছে ইসি।
ইসি আজ মঙ্গলবার থেকে দুই সিটির মনোনয়নপত্র ফরমও বিক্রি করবে। এ বিষয়ে ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, আজ থেকে ঢাকার দুই সিটিতে প্রার্থী হতে আগ্রহীরা রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।
এদিকে রিটার্নিং অফিসারের বাছাইয়ে কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হলে আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করা যাবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে নিয়োগ করেছে ইসি।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অন্য এক চিঠিতে বলা হলেছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দুই সিটির পোস্টার ও ব্যান্যার নিজ খরচে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অথবা ম্যাজিস্ট্রেট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। আরেক চিঠিতে বলা হয়েছে, আজ থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই সিটিতে ৪৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর ২৮ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন ১২৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
জামানত ও ভোটার তালিকার সিডি : ভোটারসংখ্যা অনুযায়ী দলের প্রত্যেক মেয়র প্রার্থীকে এক লাখ টাকা জামানত রাখতে হবে। এবার প্রার্থীদের ভোটার তালিকার সিডি কেনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ওয়ার্ডের সিডির জন্য প্রার্থীদের গুনতে হবে ৫০০ টাকা।
অন্যদিকে সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলরদের তিনটি ওয়ার্ডের সিডি কিনতে হবে এক হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের জামানত ভোটার অনুপাতে ১০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর জন্য ১০ হাজার টাকা জামানতের বিধান রয়েছে।
এ ছাড়া এ নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাইলে ৩০০ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমা দিতে হবে।