তরুণীর দগ্ধ দেহের নমুনায় মিলল চার ধর্ষকের ডিএনএ

SHARE

ভারতের হায়দরাবাদে গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল সারা ভারত। তারপর অভিযুক্ত চারজনকে এনকাউন্টারে মারার ঘটনায় অনেকেই বলেছিলেন, বেশ হয়েছে। আবার অনেকেরই আবার দাবি, বিচারে দোষী প্রমাণের আগেই কেন এই এনকাউন্টার?

ফরেনসিক রিপোর্ট মোতাবেক, হায়দরাবাদের গণধর্ষিতা তরুণীর দেহ থেকে সংগৃহিত স্যাম্পলের সঙ্গে মিলে গেছে এনকাউন্টারে মৃত চার অভিযুক্তের থেকে সংগৃহিত স্যাম্পেল। ফলে ফরেনসিক রিপোর্ট অনুসারে, হায়দরাবাদকাণ্ডে অভিযুক্ত মুহাম্মদ আরিফ, নবীন, শিবা ও চেন্নাকেসাভুলু দোষী।

ডিএনএ টেস্টেও মৃত তরুণীর সঙ্গে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ-ও মিলে গেছে। এক তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তরুণীর অন্তর্বাসে মেলা বীর্য থেকেই অপরাধীদের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এর আগে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী চার লরিচালককে পশু চিকিত্‍‌সককে ধর্ষণ করে জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ২৯ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত শনিবার তাদের ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় আদালতে পাঠানো হয়েছিল। দ্রুত তাদের কড়া শাস্তির দাবিতে ভারতে দাবি উঠেছিল। ওই মামলার শুনানির জন্য ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করে তেলাঙ্গানা সরকার।

ঘটনার রাতের পর ভোর ৬টা নাগাদ মেয়েটির দেহ দেখতে পান দুধের ভেন্ডর এস সত্যম। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। একে একে খুনের ঘটনা বলে জানিয়ে সাইবেরাদাবাদ পুলিশ নিখোঁজ ডায়েরিগুলো খতিয়ে দেখে। পরিবারকে ডেকে পাঠানো হলে সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া দেহের স্কার্ফ ও মৃতার গলায় গণেশের লকেট দেখে দেহ শনাক্ত করেন আত্মীয়-স্বজনরা।

পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীর বাইকটি কোথুর থেকে পাওয়া গেছে, তবে তার পার্স ও মোবাইলের খোঁজ মেলেনি। বাইকের নম্বর প্লেটটিও পাওয়া যায়নি। দেহ যেখান থেকে মিলেছে, সেই টোল প্লাজা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে কোথুরে বাইক চালিয়ে ফেলে আসার সময় নম্বর প্লেটটি খুলে রাখে অভিযুক্ত।

বিকেল ৫.৩০-এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে ত্বকের ডাক্তারকে দেখাতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। শামশাবাদের একটি টোল প্লাজায় নিজের বাইকটি রেখে একটি ক্যাবে চড়ে সেই হাসপাতালে যান তিনি। জানা গেছে, কিছুক্ষণ পর ফিরে টোল প্লাজা থেকে বাইক নেওয়ার সময় তাকে দু’জন বলেন বাইকের চাকাটি পাংচার হয়ে গেছে। সারানোর জন্য কাছেরই একটি দোকানে নিয়ে যেতে হবে। সেই সময় কয়েক মিটার হেঁটে একটি নির্জন জায়গায় দাঁড়িয়ে মেয়েটি অপেক্ষা করতে থাকেন। সেখানে বেশ কয়েকটি ট্রাক পার্ক করা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

তরুণীর বোন জানান, ৯ টা ২২ মিনিটে বোন ফোন করেছিল। সে বলেছে দু’জন টায়ার সারিয়ে দেবে বললেও না-সারিয়েই ফিরে এল। কাছেই কয়েকটি লরি নিয়ে বেশ কয়েকজন দাঁড়িয়েছিল বলে সে জানায়। সে বলে খুব ভয় পাচ্ছে। আমি ওকে বাইক রেখে দিয়েই চলে আসতে বলি।

এরপর মৃত তরুণীর বোন ৯.৪৪-এ আবারো ফোন করার চেষ্টা করলে শোনা যায় ফোন বন্ধ। রাতে বোন বাড়ি না-ফেরায় মিসিং ডায়েরি করা হয়। কখন কিভাবে মেয়েটিকে খুন করা হল, তা নিয়ে পুলিশ এখনো সন্দিহান। পুলিশের অনুমান, ওই পশু চিকিত্‍‌সককে ধর্ষণ করে খুন করে তার দেহ একটি ব্যাগে ভরে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অবশেষে ফরেন্সিক রিপোর্টেও প্রমাণিত হলো, এনকাউন্টারে মৃত্যু হওয়া চার অভিযুক্তই ছিল ওই নৃশংস ঘটনার পেছনে।