মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে বয়কটের ডাক

SHARE

আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যা মামলার শুনানির আগে মিয়ানমারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বিশ্বব্যাপী একটি প্রচারণা শুরু করেছে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনসহ বিভিন্ন দেশে সক্রিয় রোহিঙ্গাদের বেশ কিছু সংগঠন।

আজ মঙ্গলবার গাম্বিয়ার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ওই শুনানি শুরু হওয়ার কথা। শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে এরই মধ্যে হেগে পৌঁছেছেন দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।

আর এই শুনানি শুরুর আগেই ‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’ নামে মিয়ানমারকে বয়কট করার আহ্বানসংবলিত একটি প্রচারণা শুরু হয়েছে। ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের সমর্থনকারী মানবাধিকারকর্মীরা মিয়ানমারকে বিশ্বব্যাপী বয়কটের এ প্রচারণা শুরু করেছে।

ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন ‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’ শীর্ষক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যা মামলার শুনানির প্রাক্কালে রোহিঙ্গা অধিকার কর্মীরা যে ‘গ্লোবাল বয়কট মুভমেন্ট’ শুরু করেছে তাতে করপোরেশন, বিদেশি বিনিয়োগকারী, পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতি অনুযায়ী ১০টি দেশের ৩০ মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী সংগঠন একযোগে এ প্রচারণা শুরু করেছে, যার উদ্দেশ্য মিয়ানমারে সু চি ও সেনাবাহিনীর কোয়ালিশন সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।

জার্মানভিত্তিক ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘গ্লোবাল বয়কট মুভমেন্ট’-এর অন্যতম উদ্যোক্তা নে সাং লুইন ওই বিবৃতিতে বলেন, ‘জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান মিশন পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছে যে আমার পূর্বপুরুষের দেশ আমাদের রোহিঙ্গা নৃগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছে…।’

নে সাং লুইন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আমি নাগরিক বা ক্রেতা, অধিকার সংগঠনের সদস্য বা প্রতিনিধি, ধর্মীয় সম্প্রদায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা পেশাজীবী বা সংসদীয় অ্যাসোসিয়েশনসহ সবাইকে নিজেদের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা ব্যবহার করে মিয়ানমারের সঙ্গে সব প্রাতিষ্ঠানিক বা আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে ‘গ্লোবাল বয়কট মুভমেন্ট’ শুরু হয়েছে একটি অনলাইন পিটিশন অভিযানের মাধ্যমে, যেখানে নরওয়ের নোবেল কমিটিকে অং সান সু চির নোবেল পুরস্কার বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ তারা মনে করে, মিয়ানমারের বেসামরিক এই নেতা এখন আর এই পুরস্কারের যোগ্য নন।

বিবৃতিতে ১৯৯০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্রি বার্মা আন্দোলনের সূচনাকারী মিয়ামনারের মানবাধিকারকর্মী ড. মং যারনি বলেন, ‘মান্দালয়ের একটি সামরিক পরিবার থেকে আসা আমি একজন বার্মিজ এবং বুড্ডিস্ট। আমি পরিষ্কারভাবে এই বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইনকে সমর্থন করছি। আমার জন্মভূমির অবস্থা এখন ১৯৩০ সালের নািস জার্মানির মতো। সেনাবাহিনীই শুধু হাজার হাজার রোহিঙ্গার দিকে ট্রিগার চেপেই গণহত্যার অপরাধ করেনি, বরং অনেক সাধারণ মানুষও রোহিঙ্গাদের একই দৃষ্টিতে দেখছে।’

ড. মং যারনিই প্রথম ২০১৩ সালে তাঁর দেশের এই ভয়াবহ অপরাধের বিষয়টি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে এনেছিলেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। সূত্র : বিবিসি।