লবণের দাম বৃদ্ধির গুজবে যারা সাড়া দিয়েছেন, তারা এখন বেশ পেরেশানিতে আছেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেকেই বেশি বেশি লবণ কিনে বিপাকে পড়েছেন। তাদের আফসোসের শেষ নেই। আবার অনেকেই লজ্জিত। অতিরিক্ত লবণ কিনে কেউ কেউ দোকানে ফেরত দিতে এসে হতাশ হয়েছেন। কারণ, লবণের দাম তো বাড়েনি।
রংপুরের পীরগাছার বাসিন্দা আফসার আলী কালের কণ্ঠকে বলছিলেন, তিনি ৮০ টাকা কেজি দরে ১০ কেজি লবণ কিনেছিলেন। তখন নিজেকে তিনি সৌভাগ্যবান মনে করেছিলেন। এখন তিনি লজ্জায় মুখ লুকানোর জায়গা পাচ্ছেন না।
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় মঙ্গলবার রাতে বেশি দামে লবণ বিক্রি করছিলেন আবদুর রাজ্জাক নামের এক দোকানি। হৃদয় মিয়া নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানান। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত রাজ্জাককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থ তথ্যদাতাকে দেওয়া হয়।
লবণের গুজব বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, গতকাল একেবারে উল্টো চিত্র ছিল। আগের দিন যে ক্রেতা দৌড়াদৌড়ি করে বেশি দামে লবণ কিনেছিল সেই ব্যক্তিই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আফসোস করছে। এখন সেই লবণ তারা কী করবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে।
যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী এলাকার মুদি দোকানি সামসুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, এলাকার এক লোক গতকাল দুপুরে আট কেজি লবণ বিক্রি করতে নিয়ে আসে। তিনি সেই লবণের দাম বলেছেন ২০ টাকা কেজি। পরে সেই লোক লবণ নিয়ে ফিরে যায়।
লবণের দাম বেড়ে যাবে, পাওয়া যাবে না—এমন গুজবের সূত্রপাত সোমবার রাতে। এরপর গুজবে ভর করে লবণের দাম বেড়ে যায় লাফিয়ে লাফিয়ে। ঢাকাসহ সারা দেশে লবণ কেনার হিড়িক পড়ে যায়। চাহিদার তুলনায় বেশি বেশি কিনছিল ক্রেতারা। সারা দিন মানুষের মুখে মুখে ছিল লবণ নিয়ে নানা কথা। তৈরি হয়েছিল অস্থির পরিস্থিতির। সেই পরিস্থিতি এক দিনের মাথায় স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয় সরকার। সিলেটের বিয়ানীবাজার থেকে যে ব্যক্তি প্রথমে ফেসবুকে লবণ নিয়ে গুজব ছড়িয়েছিলেন তাঁকেও চিহ্নিত করেছেন গোয়েন্দারা। যেকোনো সময় ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানা গেছে।