কাশ্মীর ইস্যুতে মোদির পাশে সৌদি!

SHARE

সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরব সফর করেছেন। এই সফরে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে মোদির বৈঠক হয়েছে। এর আগে গত মাসে রিয়াদে সৌদি যুবরাজ মোহম্মদ বিন সালমনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।

এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কাশ্মীরে ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে সৌদিকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। ফলে কাশ্মীর নিয়ে রিয়াদের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে নয়াদিল্লি। সে দিন দু’জনের আলোচনায় উঠেও এসেছিল কাশ্মীর প্রসঙ্গ। কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার বিলোপ নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সলমন আশ্বস্ত করেছিলেন ডোভালকে। বলেছিলেন, কাশ্মীরকে ঘিরে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি আর পদক্ষেপের ব্যাপারগুলি বুঝতে পারছে তাঁর দেশ।

কাশ্মীর নিয়ে সেদিন আরব থেকে আসা এত বড় সমর্থনই যেন এবারের নরেন্দ্র মোদির সৌদি সফরের সুর বেঁধে দিয়েছে। শিল্প সম্মেলনে যোগ দিতে ও আরব দুনিয়ার রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে কথা বলতে সোমবার রিয়াদে পৌঁছেছেন মোদি।

এর আগে ‘আরব নিউজ’ সংবাদপত্রে এক সাক্ষাৎকার মোদি বলেছেন, ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক ছেড়ে সৌদি ও ভারত এখন কৌশলগত অংশীদারির দিকে এগোচ্ছে। ভারতে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চলেছে সৌদি।

তিনি বলেন, ২৬ লাখ ভারতীয় সৌদি আরবকে তাদের দ্বিতীয় ঘর বানিয়ে ফেলেছেন। সৌদির উন্নতিতে কাজ করে চলছেন তাঁরা।

দুদেশের সম্পর্কের উন্নতিতে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ভূমিকাকেও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিন বছর আগেও রিয়াদে এসেছিলেন মোদি। তখন তাঁকে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান দিয়েছিল সৌদি। তারপর থেকে নয়াদিল্লির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ইসলামাবাদের প্রবল প্রয়াস যে রিয়াদ-নয়াদিল্লির সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারেনি, মোদির কর্মসূচিতেই তা স্পষ্ট। সৌদির শক্তিমন্ত্রী, শ্রম ও সমাজ উন্নয়ন মন্ত্রী, পরিবেশ ও কৃষিমন্ত্রীরা এ দিন মোদির সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠকগুলিকে ‘ইতিবাচক’ আখ্যা দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানিয়েছেন, কৃষি, জলসম্পদে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বার করতে সৌদির মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

মোদির সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করেছেন সৌদি বাদশাহ সালমন বিন আব্দুল আজিজ। পরে দু’জনের বৈঠক হয়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমনের সঙ্গে নৈশভোজ করেন মোদি। ভারতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে চাইছে সৌদি আরব। এ ব্যাপারে সে দেশের রাজপরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের রূপরেখা স্থির করতে রিয়াদে শিল্প সম্মেলন ‘ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’-এর আয়োজন করেছিলেন সৌদি যুবরাজ। যাকে ‘দাভোস ইন দ্য ডেজার্ট’ বলা হয়। সেই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন মোদি।

সৌদির বাদশাহর সঙ্গে মোদির বৈঠকের আর একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারতের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করতে সৌদির সম্মতি। নিরাপত্তার প্রশ্নেও সমঝোতা বাড়াতে রাজি হয়েছে নয়াদিল্লি ও রিয়াদ।