দল থেকে উইপোকা ও ছারপোকা বের করতে হবে : তথ্যমন্ত্রী

SHARE

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে দলে যে সমস্ত অনুপ্রবেশকারী উইপোকা ও ছারপোকা ঢুকেছে তাদেরকে বের করতে হবে।

আজ রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কিং অব চিটাগাং এ আওয়ামী লীগ আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় ৬ সাংগঠনিক জেলার প্রতিনিধি সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের পর ২১ বছর ক্ষমতায় ছিল না আওয়ামী লীগ। বুকে পাথর বেঁধে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। তখন সংগঠন দুর্বল ছিল না, শক্তিশালী ছিল। সেই শক্তির উপর ভর করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং সেই ফোর খাওয়া নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে সমস্ত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে প্রতিবন্ধকতা উপক্রম করে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেছে। আমাদের সেই ফোর খাওয়া নেতৃত্বের আদলে এখন নেতাকর্মী দরকার।

পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে কোন কোন এলাকায় আলস্যতা দেখা দিয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই সুসময় সবসময় থাকবে এটি মনে করার কোনো কারণ নেই। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। ‘৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয় তখন কেউ ভাবেনি আমাদের দলে এই ধরণের একটি দুর্যোগ বয়ে আসবে। পেট্টোলবোমা বাহিনী স্বাধীনতার বিরোধী চক্র যারা আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় চান না তারা বসে নাই। সুতরাং তাদের আজকের ষড়যন্ত্রের নতুন সংস্করণ হচ্ছে আমাদের সংগঠনের মধ্যে উইপোকা-ছারপোকা ঢুকিয়ে দিয়ে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। এই ষড়যন্ত্র থেকে দলকে রক্ষা করতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, যুগে যুগে যখন আওয়ামী লীগের দুঃসময় এসেছে তখন অনেক নেতা বোল পাল্টিয়ে মূল নেতৃত্বের কাছ থেকে সরে গেছে। ক্ষমতাসীনদের সাথে আপোষ ও আঁতাত করেছে। কিন্তু তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কারো সাথে আপস ও আঁতাত করেনি। আজ এখানে যারা আছেন তারাই হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রাণ। তৃণমূলের কারণেই ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে ঠিকে আছে আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর আওয়ামী লীগের যখন দুঃসময়, ক্ষমতাসীনদের সাথে আপস করে দলকে বিভক্ত করা হলো তখন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের পর বিধ্বস্ত আওয়ামী লীগকে তিনি মায়ের মমতায় স্নেহে লালন করেছেন। তার নেতৃত্বে দল আজ পরপর চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায়। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নগুলো দেখে যেতে পারেননি প্রতিনিয়ত সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য দিনরাত্রী পরিশ্রম করে চলেছেন তিনি।

তিনি বলেন, পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে সবাই এখন আওয়ামী লীগ করতে চান। দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের যেই কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবে সেই সম্মেলনকে সামনে রেখে দলকে পরিস্কার করার কাজে আমরা হাত দিয়েছি। দলের তৃণমূল পর্যায় থেকে বিভিন্ন স্তরে অনেক অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাবাদী ঢুকেছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে যেসমস্ত অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে সম্মেলনকে সামনে রেখে তাদেরকে পদ-পদবি থেকে বাদ দিতে হবে। সংগঠনকে পরিস্কার করতে হবে। সুবিধাবাদী মুক্ত করতে হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।

বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ দপ্তর সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।